শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
  • ১৪৫ বার পঠিত

 

আজহারুল ইসলাম সাদী, স্টাফ রিপোর্টারঃ

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে চার উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতে লঙ্কানদের বিপক্ষে ব্যাক টু ব্যাক ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলো টাইগাররা।

সোমবার (১৮ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে
শুরুতে তামিম আর শেষ মুহুর্তে রিশাদ ও মুশফিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দারুণ জয় লুফে নিয়েছে বাংলাদেশ। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় তানজিদ তামিমের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। তবে মিডল অর্ডার ব্যাটাররা সুবিধা করতে পারেননি। তাওহিদ হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা ব্যর্থ হলে ম্যাচে ফেরে শ্রীলঙ্কা। শঙ্কা জেগেছিল জয় নিয়েও। সেই শঙ্কা উড়ে গেছে রিশাদ হোসেনের ঝড়ে। তার ক্যামিওতে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

একটা সময় দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়ায় চৈত্রের গরম আর ফিল্ডিংয়ের সময় পাওয়া একের পর এক চোট। সৌম্য সরকারের বদলি নেমে তানজিদ তামিমের দারুণ ইনিংস অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছিল। বাকিদের ব্যর্থতায় অনিশ্চয়তাও ছিল। শেষে মুশফিকুর রহিম ও রিশাদ হাসানের ব্যাটে কেটেছে সব শঙ্কা।

টসে জিতে আগে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কা জানিথ লিয়ানাগের সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারের শেষ বলে ২৩৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। জবাবে কনকাশন বদলি হিসেবে নামা তানজিদ হাসান তামিমের ৮১ বলে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের পর রিশাদ হোসেনের ঝড়ে ৫৮ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ধাক্কা দেন তাসকিন আহমেদ। নিজের প্রথম দুই ওভারে তিনি ফেরান লঙ্কান দুই ওপেনারকে। ৮ বলে ১ রান করা পাথুম নিশাঙ্কা তার বলে এলবিডব্লিউ হন, যদিও রিপ্লেতে দেখা গেছে রিভিউ নিলে বাঁচতে পারতেন তিনি।

তাসকিনের পরের ওভারে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দেন আভিশকা ফার্নান্দো। ৬ বলে ৪ রান করে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন তিনি। তার বিদায়ের পর কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা চাপ সামলে উঠার চেষ্টা করছিলেন জুটি গড়ে। কিন্তু এবার বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন আগের দুই ম্যাচে একাদশে সুযোগ না পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান।

পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৪০ রান তুলে দুই উইকেট হারিয়ে এমনিতেই চাপে ছিল শ্রীলঙ্কা। ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সামারাবিক্রমাকে ফেরান মোস্তাফিজ। ১৫ বলে ১৪ রান করা এই ব্যাটার ক্যাচ দেন মুশফিকের হাতে। এরপর আবার আসালঙ্কাকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন মেন্ডিস।

এবার তাদের জন্য বাধা হন রিশাদ হোসেন। আগের দুই ম্যাচে বেঞ্চে থাকা এই লেগ স্পিনার নিজের প্রথম বলেই পেয়ে যান উইকেটের দেখা। রিশাদের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে দুর্বল শট খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন ৫১ বলে ২৯ রান করা মেন্ডিস। নিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে এসে এটিই রিশাদের প্রথম উইকেট।

৪৬ বলে ৩৭ রান করে আসালঙ্কাও ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে, তাকে ফেরান ওই মোস্তাফিজই।

লিয়ানাগের সঙ্গে ৭৮ বলে ৬০ রানের জুটি ছিল তার। মোস্তাফিজ চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ায় ৪৮তম ওভার করতে আসা সৌম্য সরকার ফেরান তাকে। ৪০ বলে ১৫ রান করেন তিনি।

শেষ অবধি দলের হাল ধরতে থাকেন লিয়ানাগে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির দেখাও পেয়ে যান তিনি। আগের ছয় ইনিংসে তিনটিতে হাফ সেঞ্চুরি ছিল তার। ১০২ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১০১ রান করে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

রান তাড়ায় নামা বাংলাদেশকে শুরুতেই অবশ্য ধাক্কা খেতে হয়। নিজেদের বোলিং ইনিংসের শেষ দশ ওভারে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন। এর মধ্যে ছিলেন সৌম্য সরকারও। শেষ অবধি এই ওপেনারের কনকাশন সাব করতে হয়।

তার জায়গায় ব্যাট করতে নেমে তানজিদ হাসান তামিম অবশ্য আলো ছড়িয়েছেন। এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ৫০ বলে ৫০ রানের জুটি ছিল তার। ২২ বলে ১২ রান করে ড্রাইভ করতে গিয়ে এক্সট্রা কাভারে আভিশকা ফার্নান্দোর হাতে ক্যাচ দেন বিজয়। লাহিরু কুমারার বলে আউট হয়ে যান তিনি।

পরের ওভারে এসে নাজমুল হোসেন শান্তকে ফেরান কুমারা। তার বলে উইকেটে পেছনে ক্যাচ দেন ৫ বলে ১ রান করা এই ব্যাটার। পরে কুমারাই নেন তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেট। ২৫ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি ছোঁয়া তানজিদ খেলেন ৮১ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৪ রানের ইনিংস।

সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু মিরাজকে ফিরিয়ে হাসারাঙ্গা চাপ বাড়ান বাংলাদেশের ওপর। ৬২ বলে ৪৮ রানের জুটি ছিল তাদের। মিরাজ ফেরার পর উইকেটে আসেন রিশাদ।

উইকেটে এসে প্রথম বলেই হাসারাঙ্গাকে ছক্কা হাঁকান রিশাদ। ওই ওভারের বাকি চার বলে আরও একটি চার ও ছক্কা। হাসারাঙ্গা আবার ৪০তম ওভার করতে আসেন। ওই ওভারে ২৪ রান নেন রিশাদ। দলের জয়ও তখন অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে থিকসানাকে চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন মুশফিক।

২৫ বলে তার সঙ্গে রিশাদের জুটি ছিল ৫৯ রানের। ১৮ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৮ রান করেন রিশাদ। ৩৬ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। এই জয়ে সিরিজটিও নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডে তারা জেতার পর দ্বিতীয়টিতে জিতেছিল সফরকারীরা।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।