শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

সাড়া দেশে উন্নয়ন হলেও’মাটিয়ান হাওর পথে ভোগান্তি

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১৭৬ বার পঠিত

শামছুল আলম আখঞ্জী,তাহিরপুর:

সাড়া দেশে উন্নয়নের ছোঁয়া পেলেও,  সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওর পথে

এর ছোঁয়া লাগেনি। এর ফলে সুবিধাবঞ্চিত হাওর বাসি উপজেলা সদরে যাতায়াতে রয়েছে ভোগান্তি।

মাত্র ৭ কিলোমিটার রাস্তার কাছে অসহায় উপজেলার তরং, শিবরামপুর, শ্রীপুর, মাটিয়ান, কদমতলী, খালাশ্রীপুর,বেতাগড়া, নয়াবন্দ, দলইগাঁও, জামালপুর,নবাব পুর মদনপুর, ভোরাঘাট, মন্দিয়াতা, কামালপুর,  মুজরাই, ছিয়ারগাও, জয়পুর, ছিলানী তাহিরপুর গোলাবাড়ি, তেরঘর, রতনপুর কামিনী পাড়া তেলীগাও সহ অসংখ্য গ্রামের  মানুষ।

সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের এই সময়টাতেও অবহেলিত হাওর  অঞ্চল।  মাত্র ৭কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ হলে যোগাযোগ সহজ হয়ে যেতো উপজেলা সদরের সাথে।  সেই সাথে কমে যেতো অন্তহীন দুর্ভোগ। মাটিয়ান হাওরের বুক দিয়ে চলে গেছে এই ৭ কিলোমিটার রাস্তা। রোপণ হাজার হাজার একর জমি রাস্তা দু পাশে।

কিন্তু পাকাকরণ না হওয়ায় ২৫টি গ্রামের প্রায় ২৫/৩০ হাজার মানুষ কৃষি পূণ্য পরিবহনসহ, উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দীর্ঘদিন থেকে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর বাজার হতে বড়দল গ্রামের সংযোগ সড়কটি পাকা করণ করার কোন উদ্যোগ নেই দায়িত্বশীলদের। যে কারণে সাধারন মানুষসহ হাওর পাড়ের কৃষক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে। এই রাস্তাটি মাটিয়ান হাওর বুক চিরে এপার ওপারের সংযোগ সড়ক।

ওই এলাকার ভোক্তভোগীরা জানান, হাওরের মানুষ মনে প্রানে বিশ্বাস করে, জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়, তখন এই রাস্তাটির অবহেলিত থাকতে পারেনা। তাদের দাবি-স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরলেই এই রাস্তাটি দ্রুত আলোর মুখ দেখবে।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সর্ব বৃহত হাওর, কৃষি  ফসলের জন্য বিখ্যাত দেশ জুড়ে  । এখানকার মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। যোগাযোগ ব্যবস্তা ভাল না হওয়া, পরিবহন খরচ বেশী হয়ে যায়। জমি রোপণের সময়।তাই সোনালী ফসল ঘরে আনার পরও কৃষক ৠন গ্রহস্ত হয়ে পড়ে। এখানে যদি কিছু রাস্তা পাকা করণ রাস্তা হত তাহলে কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়ে শহরের সুখ গ্রামে থেকেই পেত। প্রসূতি মা, মুমূর্ষু রোগী অতি সহজেই উপজেলা সদর  কিংবা জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা পেয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যেত। অন্য দিকে  আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অতি সহজেই যাতায়াত করে দুর্নীতি

অপরাধ মূলত কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে, সফল হত।

উপজেলার শ্রীপুর বাজার হয়ে মোয়াইন গুদারা ঘাট মধ্যে দিয়ে    বড়দল গ্রাম পর্যন্ত (প্রায়) ৭কিলোমিটার রাস্তা মাটিয়ান হাওরের মধ্যে দিয়ে দু পাড়ের সংযোগ সড়ক তৈরী করে ।

অল্প সময়ে  যোগাযোগ করতে পারত উপজেলা সদরে। শহরের মত সব সুযোগ সুবিধা ভোগকরতে পারত, সদরে সাথে যোগাযোগ করে শিক্ষা, চিকিংসা ব্যবসা,বানিজ্য, অর্থনৈতিক লাভবান হত পারত হাওর পাড়ের মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাওরাঞ্চলের মানুষ ছয়মাস জলের উপর চলে নৌযান আর হেমন্ত  ছয়মাস  চলে আদিকালের ব্যবস্তা, পায়ে হেঁটে ,তবে একটু উন্নত হয়েছে মটরসাইকেল পরিবহন এসে। কিন্তু আজও হয়নি মুমূর্ষু রোগীসহ গর্ভবতী মায়ের জন্য,  কোন ব্যবস্থা।

হেমন্ত,গর্ভবতী ও মুমূর্ষু রোগী নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় । যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায়,চিকিংসার অভাবে  অকালেই ঝড়ে যায়  গর্ভবতী মা ও শিশু । হাওর জনপদে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, আদি যুগের মতই পায়ে হেঁটে, যদিও মটরসাইকেল পরিবহন এখন চলে। তা দিয়ে এসব রোগী স্থানান্তরিত করা বড় বিপজ্জনক হয়ে যায়। অপারগ হয়ে মানুষ তা ব্যবহার করে। নৌ পথে যেতে গেলে সময় লাগে ঘন্টা পর ঘন্টা। কোন দিগে যাবে যে দিগে যাবে সেই বিপদ এই জনপদে মানুষ । জনগুরুত্ব এই রাস্তাটি পাকা করণ হলেই শহরের রূপ নিবে হাওরাঞ্চলে ।

হাওর পাড়ের কৃষক  ছিলানি তাহিরপুর   গ্রামের আবুল ফয়েজ  বলেন ,বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার, কৃষকের জন্য সব সময় আন্তরিক।তবে মাটিয়ান হাওরের কৃষকদের এই চরম দুর্ভোগ কষ্ট দায়ক। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের  এর কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি। কৃষকদের জন্য গুপাট সড়ক ও ৭কিলোমিটার রাস্তা পাকা করণ করতে,  দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন । এতে কৃষক লাভ হবে, যোগাযোগ ব্যবস্তা ভাল হয়ে  দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে রয়েছে তিনটি শুক্ল ষ্টেশন এর থেকে সরকার রাজেস্ব পায় শত কোটি টাকা। আর ও আছে পর্যটন কেন্দ্র নীলাদ্রী লেক  ট্যাকেরঘাট, মাদার ফিসারী অভয়ারণ্য রামসার সাইট  টাংগুয়ার। এসব দেখতে প্রতিদিনের আসে দেশ বিদেশ থেকে পর্যটক।  এই রাস্তাটি পাকা করণ হলে অতিসহজেই দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবে আগতরা।

কথা হয় শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান   নুরুল ইসলাম এর সাথে তিনি বলেন আমি যখন চেয়ারম্যান ছিলাম তখন সংযোগ সড়কটি  সূচনা করি।অনেক আশা নিয়ে যাত্রা করেছিলাম  ভেবে ছিলাম  আগামী প্রজন্মসহ গর্ভবতী মা, মুমূর্ষু রোগী এই রাস্তা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে দ্রুত চিকিংসা সেবা পাবে।

আমি উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দুর্ভোগ লাঘব করেন হাওর পাড়ের সহজ সরল মানুষের জন্য,দ্রুত রাস্তাটি পাকা করণ করা হউক।

উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার জানান, আমি এই রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য  নিজ উদ্যাগে মাফসহ উপজেলার প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করে চলছি। অচিরেই এলজি টির আইডি ভোক্ত হয়ে পাকা করণের জন্য বরাদ্দ

আসবে।  তিনি আরও বলেন  এই রাস্তাটি পাকা করণ হলে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের  এম্মুলেন্স  সরাসরি  শ্রীপুর বাজার পর্যন্ত আসতে পারবে। এতে মুমূর্ষু রোগীসহ গর্ভবতী মা, অল্প সময়েই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে উন্নত চিকিৎসার সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। আমি  উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ চলমান রেখেছি, খুব শীগ্রই দুর্ভোগ লাগব হবে,  হাওর পাড়ের মানুষের।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর  উপজেলার প্রকৌশলী আরিফ উল্লা খান বলেন,  আমি নতুন এসেছি সব রাস্তা ঘাট চিনি না। তবে আমাদের অফিসের সাজু বলতে পারবে। এই রাস্তাটি আইডি ভোক্ত কিনা, কিংবা বরাদ্দ হয়েছে কি না আমি বলতে পারবনা। আপনি এসে সাজুর কাছে জানতে পারেন।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।