তাপস কুমার ঘোষ,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কালিগঞ্জ উপজেলা হাইওয়েতে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের হাতে ট্রাক্টর।
প্রচলিত নাম ট্রাক্টর। সাধারণত কৃষিজমির মাটি কাটা, ভারী মালমাল টেনে নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয় ট্রাক্টর নামের এই যান। এতে মানুষের অনেক উপকার হয়, পরিবহনের কাজ সহজ হয়ে যায়। তবে উপকারী এই যানের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় অতিষ্ঠ কালিগঞ্জ উপজেলার জনগণ। একদিকে ভারী এই যানের কারণে প্রতিনিয়ত ভাঙছে সড়ক; অন্যদিকে অপ্রাপ্তবয়স্ক, অনভিজ্ঞ, লাইসেন্সবিহীন চালকদের বেপরোয়া চালানোয় প্রতিমুহূর্তে দুর্ঘটনার আতঙ্ক থাকেন তাঁরা। এরই মধ্যে গত চার বছরে এসব যানের সঙ্গে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে অসংখ্য মানুষের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যানটি এখন সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার মানুষের কাছে দানব হিসেবে পরিণত হয়েছে। এই ট্রাক্টর চলাচলের ফলে একের পর এক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যোগাযোগব্যবস্থা। পরিবহন করা মাটি ও বালু সড়কে পড়ে থকায় সড়ক ধুলাবালিতে ভরে যায়। এই দুর্ভোগে অতিষ্ঠ এলাকার জনজীবন।
উপজেলার শহর থেকে গ্রামাঞ্চলের যেকোনো স্থানে একটু দাঁড়ালেই চোখে পড়বে বিকট শব্দে বালু, ইট কিংবা রড-সিমেন্টসহ নানা রকম মাল বোঝাই করে এই যান সড়ক কাঁপিয়ে চলছে। শহর ও আশপাশের ব্যস্ততম সব সড়ক এখন এসব অবৈধ যানের দখলে। এই যন্ত্রের বেপরোয়া চলাচলের কারণে এখন প্রায় সব রাস্তায় আতঙ্কের নাম।
অপ্রাপ্তবয়স্ক, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের দ্বারা পরিচালিত এসব যানবাহন অহরহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। গত চার বছরে মাহেন্দ্র ট্রাক্টর নামের এই যানের সঙ্গে সংঘর্ষে এবং চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেছে গণমানুষের। আহত হয়েছে বহু লোক।
এক্সিডেন্টে প্রাণ হারালে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয় ট্রাক্টরের বিষয়টি। এ নিয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাক্টর বন্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এসব মাহিন্দ্র ট্রাক্টর তো কেবল জমি চাষের জন্য অনুমোদিত। রাস্তায় এসব যানবাহন চলাচলের কোনো অনুমতি নেই। নেই বিআরটিএর কোনো অনুমতি। অভিযোগ রয়েছে, এসব মাহেন্দ্র ট্রাক্টরের মালিকেরা বেশির ভাগই প্রভাবশালী লোকজন হওয়ায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয় না প্রশাসন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলায় অসংখ্য মাহেন্দ্র রয়েছে। আর এই মাহেন্দ্রর অধিকাংশ মালিকই প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় সাধারণ মানুষসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও এসব প্রতিরোধে অসহায়।
এলাকাবাসী আরো বলেন, ‘মাহেন্দ্র ট্রাক্টর নামের এই অবৈধ যানের কারণে বেড়েছে দুর্ঘটনা। অতিরিক্ত মাল বোঝাই করে চলাচলের কারণে উপজেলার সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বিঃদ্রঃ-ট্রাক্টরগুলোর মালিকেরা বেশির ভাগই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী।