আকাশ সাহাঃ সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
একটি রাস্তা অনেক সময় ঐ এলাকার উন্নয়নের মাধ্যম হয়ে দাড়ায়। আবার ঐ রাস্তাই জনসাধারণের জন্য মরণফাদ হয়ে দাড়ায়। ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া দক্ষিণপাড়া শেষ মাথায় প্রায় ৫০০মিটার কাঁচা রাস্তার ফলে চরম ভোগান্তিতে পরেছে স্থানীয় ও পার্শবর্তী হাজারও মানুষ। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পরে। জরুরী সেবা কোন গাড়ি গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। এমনকি মরদেহ নিয়ে শ্মষাণ বা গোরস্থানে যেতেও সমস্যায় পরেন স্থানীরা। রাস্তার জন্য লেখাপড়ায় বিগ্ন ঘটে শিক্ষার্থীরা।
স্বরজমিনে গিয়ে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটি মাটি ও পানির সংমিশ্রণে কাদার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। বেশ কিছু স্থানে রয়েছে খানা খন্দ। পাকিস্তান আমলে তৎকালিন চেয়ারম্যান মরহুম গোলাম আলী খান স্থানীয় হিন্দুদের চলাচলে কথা বিবেচনা করে এই কাচা রাস্তাটি নির্মান করেন। এরপর সময় পেরিয়ে গেলেও অনেক জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর খোজ খবর রাখে না। এখানে প্রায় ৭৫ ভাগ হিন্দু ধর্মালম্বীদের বসবাস। সবাই মিলে স্থানীয় চেয়ারম্যান, প্রশাসন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে কাচা রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সুশীল মালো বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান সোহাগ খানের দাদা মরহুম গোলাম আলী খান অনেক আগে এই কাচা রাস্তাটি নির্মান করে দেন। সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় হাটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও পার্শবর্তী মাঠের সমস্ত ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়িতে নেওয়া হয় এবং বাজারজাত করা হয় এই জন্য রাস্তাটি প্রায় সময় কাদা মাটি ও পানি আটকে থাকে। রাস্তাটি পিচঢালাই করলে বা ইট দিয়ে পূর্ণনির্মান করলে সবারই উপকার হবে।
স্থানীয় সাবেক প্রাধান শিক্ষক গণপতি চ্যাটার্জী বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারনে প্রতিদিন কয়েকশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠিানে যাতায়াত করতে সমস্যা হয়। জরুরী সেবার কোন গাড়ি (পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, এম্বুলেন্স) বা যেকোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারে না, হিন্দু বা মুসলিম কেউ মারা গেলে রাস্তা সমস্যা থাকায় মরদেহ শ্মাশান বা গরস্থানে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়। অসুস্থ্য কোন ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল বা চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কোন ব্যবস্থা নাই। অতি প্রাচিন রাস্তাটি সংস্কার বা পূর্ণ নির্মান এখন সময়ের দাবি।
স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ সুত্রধর বলেন, বিভিন্ন দিক দিয়ে গৌড়দিয়া শেষ মাথার কাচা রাস্তাটি খুবিই গুরুত্বপূর্ণ। এটি সালথা উপজেলা পরিষদের কাছেই। মেঘ বৃষ্টির দিনে রাস্তাটি ব্যবহারের অনপোযোগি হয়ে যায়। রাস্তাটি খারাপ হওয়ার কারনে বাচ্চা থেবে বুড়ো সবারই কষ্ট হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ মাননীয় সংসদ সদস্য শাহাদাব আকবর লাবু মামার কাছে আমাদের আবেদন রাস্তাটি পাকাকরণ করে আমাদের উপকৃত করবেন।
আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল হাসান খান (সোহাগ) বলেন, রাস্তাটি অনেক পুরাতন, আমার দাদা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় রাস্তাটি নির্মান করেন,রাস্তাটি পাকাকরণে আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করবো।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, দ্রুত সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে।
সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াদুদ মাতুব্বর বলেন, আশা করছি খুব দ্রুত নতুন প্রকল্প দিয়ে রাস্তাটি পাকাকরণ করতে পারবো।