আকাশ সাহাঃ সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের সালথায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর জ্যেষ্ঠ পুত্র, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব , বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সকাল ৯টায় উপজেলা পরিষদের চত্বরে স্থাপিত শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপজেলা প্রশাসন।
এরপর পর্যায়ক্রমে উপজেলা পরিষদ, থানা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, অফিসার্স ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আক্তার হোসেন শাহীনের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরী লাবু।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুদর্শন শিকদার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিনয় কুমার চাকী, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোস্তফা আহসান কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আলীমুজ্জামান, সালথা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শেখ সাদিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব মিয়া, ফরিদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শওকত হোসেন মুকুল প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দেশের সমাজভাবনায় শেখ কামাল মাত্র ২৬ বছরের জীবনে বাঙালির সংস্কৃতি ও ক্রীড়াক্ষেত্রে এক বিরল প্রতিভাবান সংগঠক ও উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি এ দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য আজীবন অনুকরণীয়। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিয়েও শেখ কামাল খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তিনি যেমন ছায়ানটে সেঁতার বাজিয়েছেন, তেমনি আবাহনী ক্রীড়াচক্র নামক ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়াও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটার ও স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক।তিনি ছিলেন অনেক গুণের অধিকারী অর্থাৎ আদর্শ বাবার আদর্শ সন্তান। তিনি ছিলেন বিনয়ী ও মার্জিত। দাম্ভিকতা ছিল তার স্বভাব বিরুদ্ধ। তারুণ্যের প্রতীক শেখ কামাল বেঁচে থাকলে হয়তো বর্তমান বাংলাদেশ যুব, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আরও আধুনিক ও প্রগতিশীল অবস্থানে আসীন থাকতো।
কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুসহ পুরো পরিবারের সঙ্গে শেখ কামালকেও আমরা হারিয়েছি। এ ছাড়াও বক্তারা দেশের ক্রীড়াঙ্গন, সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শেখ কামালের অবদানকে স্মরণ করেন।
আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে দুপুর ১২ টায় সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ, ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তাকেও ঘাতকরা হত্যা করে।
অনুষ্ঠান টি সঞ্চালনা করেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণ চন্দ্র চক্রবর্তী।