জয়ন্ত সাহা যতন, স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশণ শুরু করেছেন কুমারী ময়না রানী (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রী।
সোমবার (২ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ (মাঝিপাড়া) গ্রামে প্রেমিকের বাড়িতে বসে অনশন করতে দেখা যায় ওই স্কুলছাত্রীকে।
এর আগে, রোববার (১ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে স্কুলছাত্রী ময়না রানী তার প্রেমিল পলাশ চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশণ শুরু করেন। প্রেমিক পলাশ চন্দ্র (২৩) ওই গ্রামের বিমল চন্দ্র বর্মণের ছেলে।
বিয়ের দাবিতে অনশণে বসা প্রেমিকা কুমারী ময়না রানী একই গ্রামের নরেশ চন্দ্র দাসের মেয়ে। ময়না রানী স্থানীয় শোভাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা যায়, স্কুলছাত্রী কুমারী ময়না রানীর সঙ্গে এক বছর ধরে পলাশ চন্দ্র বর্মণের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রেমিক পলাশ চন্দ্র বর্মণ একাধিকবার ওই স্কুলছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেন। সম্প্রতি বিষয়টি উভয়ের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হয়। এরপর থেকেই পলাশ চন্দ্রকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন ওই স্কুলছাত্রী। কিন্তু তাতে প্রেমিক পলাশ ও তার পরিবারের লোকজন রাজি হননি। এনিয়ে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা নরেস চন্দ্র এলাকাবাসী ও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। স্থানীয়রা কয়েকদফা বসেও বিষয়টি সমাধান কর্যে পারেনি। এমতাবস্থায় ওই স্কুলছাত্রী বাধ্য হয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক পলাশ চন্দ্রের বাড়িতে অনশণে বসেন।
এদিকে, বিয়ের দাবিতে অনশণে বসার জন্য প্রেমিকা ময়না রানী প্রেমিক পলাশ চন্দ্রের বাড়িতে প্রবেশ করলে প্রেমিকের মা ও পরিবারের লোকজন তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। পরে ঘর তালা বদ্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, ময়না ও পলাশের প্রেমের বিষয়টি প্রায় মাসখানেক আগে জানাজানি হয়। তখন বিষয়টি সমাধানের জন্য ওই মেয়ের বাবা ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়দের সবার কাছে যায়। কিন্তু কেউ বিষয়টি সমাধান করে দেননি। হঠাৎ করে সকাল ১১ টার দিকে প্রেমিকা ময়না রানী প্রেমিক পলাশ চন্দ্রের বাড়িতে এসে বিয়ের দাবিতে অনশণ শুরু করেন।
অনশণে বসা স্কুলছাত্রী কুমারী ময়না রানী বলেন, পলাশের সাথে আমার এক বছরের প্রেম। সে একাধিকবার আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এখন সে বিয়ে করতে চাচ্ছেনা। আজ সকালেও সে আমাকে ফোন করে বাড়িতে ডেকেছে। আমি আসার পর পলাশের মা বাবা আমার চুলের মুঠি ধরে গায়ে হাত দিয়ে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তখন থেকেই বসে আছি। পলাশ আর তার বাড়ির লোকজন সবাই লাপাত্তা হয়েছে। সে যদি আমাকে বিয়ে না করে তাহলে আমি ওর বাড়িতেই আত্মহত্যা করবো। এছাড়া ছাড়া আমার কোন উপায় নাই।
অনশণে বসা স্কুলছাত্রীর বাবা নরেশ চন্দ্র দাস বলেন, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে পলাশ চন্দ্র। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও মীমাংসা করতে পারছেনা। সবাই মেয়ের ইজ্জতের বিনিময়ে ৫ লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চায়। থানায় অভিযোগ দিয়েও কাজ হয়নি। আমি সবার কাছে অনুরোধ করছি, যে ছেলে আমার মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করছে ওই ছেলেক দিয়েই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে।
ছাপড়হাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কনক কুমার গোস্বামী বলেন, মেয়েটি তার প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশণে বসেছে। রোববার সকাল থেকেই ছেলের পরিবারের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে। মেয়েটির নিরাপত্তার কথা ভেবে নারী গ্রামপুলিশসহ দুইজনকে পাহারায় রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেদিন তাদের সম্পর্কের কথা জেনেছি সেদিন থেকেই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা রাখি দ্রুত বিষয়টি সমাধান হবে।
এবিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন চ্যাটার্জি বলেন, বিয়ের দাবিতে স্কুলছাত্রীর অনশণের বিষয়টি কেউ জানায়নি। তবে কয়েকদিন আগে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা একটি অভিযোগ দিয়েছে৷ বিষয়টি তদন্ত চলছে।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।