মোহাম্মদ সোলাইমান,হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে অপহৃত নবম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে পতেঙ্গা থেকে উদ্ধারসহ তিন অপহরণকারীকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আটককৃতরা হলেন, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার আমির পাড়া এলাকার মৃত আব্দুস সালামের পুত্র রেজাউল করিম (৫৩), আটককৃত রেজাউল করিমের স্ত্রী সাবিহা সুলতানা (৪৫) ও তার ছেলে মোদাসসির (২৫)।
আজ বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মোহাম্মদ নূরুল আবছারের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান। র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো জানান, অপহৃত ১৫ বছর বয়সী ভিকটিম একজন নবম শ্রেণীর ছাত্রী। অপহরণকারী মোদাসসির বিভিন্ন সময়ে ভিকটিমকে মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিত এবং বিরক্ত করত। ভিকটিম বিষয়টি তার মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে জানায়। ভিকটিমের বাবা প্রবাসী হওয়ায় অভিভাবক হিসাবে ভিকটিমের মা তার মেয়েকে বিরক্ত না করার জন্য মোদাসসিরকে অনুরোধ করেন। লজ্জার ভয়ে এবিষয়ে আর কোন সালিশ বিচার না করে তার মেয়েকে নিজ দায়িত্বে মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে দিত।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে পৌরসভা এলাকার ভিকটিমদের বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় ভিকটিম ঘর হইতে বের হয়ে উঠানে যায়। তারপর হতে ভিকটিম ঘরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন ভিকটিমের মা হাটহাজারী মডেল থানায় একটি জিডি করেন এবং তার মেয়েকে খোঁজাখুঁজি অব্যহত রাখেন। একপর্যায়ে ভিকটিমের মা জানতে পারে উঠানে পায়চারী করার সময় হঠাৎ আসামী মোদাসসির অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের সহযোগিতায় তার মেয়েকে জোরপূর্বক রাস্তার উপর নিয়ে সিএনজি চালিত একটি অটোরিকশা করে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে চলে যায়।
বিষয়টি জানার পর মোদাসসিরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফোন করে তার মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মোদাসসির তার মেয়েকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মোদাসসিরের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনকে আসামী করে মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম। এর একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানাধীন নাজির পাড়া এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী মোদাসসিরসহ তার মা ও বাবাকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মোদাসসির এবং তার মা ও বাবা স্বীকার করে তারা ভিকটিমকে অপহরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, ৪ অক্টোবর ঐ বাসা হতে অপহৃত ভিকটিমকে নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করার পরিকল্পনা করছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানানো