রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মুন্সীগঞ্জে টঙ্গীবাড়ীর দিঘীরপাড় ইউনিয়ন শাখার উদ্দ্যোগে গন সমাবেশ অনুষ্ঠিত সুজন এর সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কমিটি অনুমোদন কালিগঞ্জে ইকরা তা’লীমুল কুরআন নূরানী মাদ্রাসায় সুধী ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে প্রত্যয় আইডিয়াল স্কুলে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত  তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে ব্যারিষ্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন  গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আইইউটির শিক্ষার্থীর মৃত্যু ৩ আহত ১৫ রংপুরে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের বিভাগীয় সমাবেশ কালিগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে ৩৪৭বোতল ফেন্সিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক  বোয়ালখালীতে মদ বিক্রেতা আটক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা লিফলেট বিতরণ

স্বেচ্ছাচারিতা, হয়রানি, দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাচন অফিসার রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে।

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২
  • ১৭৩ বার পঠিত

 

মোঃ ইমরান খান গাবুরা, শ‍্যামনগর প্রতিনিধিঃ

শ‍্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত ছুটে আসা মানুষকে রবিউল ইসলাম নানান ভাবে হয়রানি করে নির্বাচন কার্যালয়টিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। মাসের পর মাস বছরের পর বছর ঘুরেও কোন কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।

বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নতুন ভোটার সংশোধন ও স্থান পরিবর্তনসহ সব কাজে ঘুষ দিতে হয় নির্বাচন কর্মকর্তাকে। কাজের ধরন বুঝে টাকার অংক চাওয়া হয়, তবে নতুন ভোটার হতে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা দিতে হয়। এমন ভোগান্তিতে উপজেলার হাজারো সেবাপ্রার্থী। উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দুর্নীতির সুযোগে দালালদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেবাপ্রার্থীদের আরো অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন অফিসার সরকারি সকল নিয়মকে উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষকে দিনের পর দিন মাসের পর মাস বছরের পর বছর ঘোরাতে পছন্দ করেন।
শ্যামনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের চিংড়িখালি গ্রামের অভিযোগকারী সালমা খাতুন বলেন, গত ৬ মার্চ নতুন ভোটার হওয়ার সকল ডকুমেন্ট জমা দিয়ে ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ দেই। তিনমাস পার হওয়ার পরও এখনো ভোটার আইডি নাম্বার হয়নি। নির্বাচন অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে বলেন, গোপনে একা যোগাযোগ করতে এবং আমি ওনার কথামতো শ্যামনগর উপজেলা নির্বাচন অফিসে দেখা করি । আমার সকল কাগজপত্র দেখে তিনি আমার কাছে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। আমি দিতে অস্বীকার করলে আমার কাগজপত্র ভুয়া বলে আখ্যায়িত করে এবং আমার ভোটার স্লিপটি নিয়ে নেয়।

নির্বাচন অফিসের বারান্দায় কথা হয় সোরা গ্রামের ফাতেমা আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, একই উপজেলায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে আমার স্বামীর ঠিকানায় ভোটার স্থানান্তর করতে এসেছি। অফিসের স্যার বলেন, জরুরি হলে ৭’শ টাকা, আর নরমাল ৩৫০টাকা লাগবে।
শ্যামনগর সদরের মাজাট গ্রামের মোমিনুর রহমান জানান তার স্ত্রী জেসমিনের ব্যাপারে তিনি ১৫ দিন ধরে টালবাহানা করছেন ঘুরচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে পঙ্গু মোমিনূর রহমান বলেন আমাকে ক্রেস্ট নিয়ে হাটাহাটি করতে হয়। গতকাল অফিসে এসেছিলাম। কয়েকটি কাগজ চাইল। আজকে আবার নতুন নতুন কাগজ চাচ্ছে। কাগজ চাওয়ার আর শেষ হবে না। আমার কাজের দরকার নেই হয়রানির হাত থেকে বাঁচাও।

উপজেলার মুন্সিগঞ্জ চুনকুড়ি গ্রামের ফয়জুলের ছেলে রিপন বলেন, আমি অনলাইনের তারিখ মোতাবেক ১ মাস পরে অফিসে যাই। নির্বাচন অফিসার ফাইল দেখে বলে, এটা (অফিসারের) আমার স্বাক্ষর নয়- এই বলে ভোটার আবেদনের ফরমসহ সকল কাগজপত্র ছিড়ে অকথ্য ভাষায় গালীগালাজ করে রুম থেকে বের করে দেন।

উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূর থেকে আসা গর্ভবতী অঞ্জনা মন্ডল বলেন, আমি স্যারকে অনুরোধ করেছি আমার শরীর ভালা না আজকে ভোটার করে দেন, স্যার বলে শরীর ভালো না ভোটার হতে আসছেন কেন?

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সেবা প্রার্থী তাপস সরকার, রেজাউল ইসলাম, শাহরিয়ার কবির, প্রসাদ কুমার ,হাবিবুর রহমান সহ একাধিক ভুক্তভোগীরা বলেন, টাকা ছাড়া শ্যামনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কোনো প্রকার সেবা নেয়া সম্ভব না। তারা আরো বলেন এনআইডি’র অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে গেলে ভদ্রলোক ২৩০ টাকা করে নিয়েছে। তারা একটু কম দিতে চাইলেও দিতে পারেন নি। কোনো ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয় পত্রের সামান্য ভুলের সংশোধনের জন্য গেলেও অফিস সহকারী বলে দিচ্ছেন ৬ মাস লাগবে, তার আগে হবে না। এভাবেই ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের।
কেউ নতুন ভোটার হতে নির্বাচন অফিসে সকল ডকুমেন্ট নিয়ে আসলে নির্বাচন অফিসার ১ থেকে দেড়মাস তারিখ পিছিয়ে দিয়ে স্বাক্ষর করে দেন।
যেখানে অনলাইন এনআইডি তালিকায় ১১৫ টাকা থাকলেও তিনি নিচ্ছেন ২৩০ টাকা, ভোটার স্থানান্তরে সরকারি কোনো ফি না থাকলেও নিচ্ছেন ২৩০ টাকা। আর এনআইডি কার্ডে কোনো প্রকার ভুল সংশোধন করতে হলে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা দিতে হয়। তবে অনলাইন কপি আনতে গেলে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী ২৩০ টাকা নিয়ে আবার শিখিয়ে দিচ্ছেন কেউ জানতে চাইলে বলবেন ১৪০ টাকা নিয়েছে।
এভাবে উপজেলার সেবাপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে গেলে যেখানে ব্যাংক স্ল্লিপ নিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে নগদ টাকায় করিয়ে দেন এই অফিস সহকারী। এতে সরকার অনেক রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
ভোটার তালিকায় নাম উঠানো, ও স্থান পরিবর্তনসহ সব কাজে ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। নির্বাচন অফিসে ঘুষবাণিজ্য এখন ওপেন-সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দুনীতির কারণে মানুষ পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছে। ছবি ফিঙ্গার নেয়ার পরও সকল ডকুমেন্ট, এনআইডি সার্ভারে আপলোড না দিয়ে মাসের পর মাস ফাইল টেবিলে ফেলে রেখে দিয়েছে, যারা টাকা দিয়েছে তাদেরটা দেখে দেখে আপলোড করা হয়। এতে ভোগান্তিতে উপজেলার হাজার হাজার সেবাপ্রার্থী।

ভুক্তভোগীরা বিষয়টিকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।