মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
হেঁটে ১৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ভারতের ২৭টি রাজ্য ভ্রমণ শেষে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের বাসিন্দা রোহান আগারওয়াল ঘুরে গেলেন ঝালকাঠি।এর আগে বাংলাদেশের ৪৯টি জেলা তিনি হেঁটে ভ্রমণ করেছেন|ভারতের ২১ বছর বয়সী এ তরুণ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় পৌঁছান ঝালকাঠিতে।বুধবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি ঝালকাঠির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কথা বলেছেন বিভিন্ন মহলে।প্লাস্টিক বর্জ্যের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে তার এ ভ্রমণের উদ্দেশ্য|এমনটাই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ভারতীয় এ তরুন|
সফরকালীন সময়ে তিনি কথা বলেছেন, বণিক সমিতির সভাপতি, পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠনের অনেকের সঙ্গে। সবার সঙ্গে সাক্ষাতে রোহান আগারওয়াল বলেন, আমার এ যাত্রা শুরু করার মূল উদ্দেশ্য হলো প্লাস্টিকের বিপজ্জনক প্রভাব সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করা এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দেওয়া। আমার লক্ষ্য পরবর্তী প্রজন্ম যেন দূষণমুক্ত একটি পৃথিবী পায়, বিশুদ্ধ পরিবেশ পায়। আমি এ যাত্রায় মোট ৯৪০ দিন ধরে।বাংলাদেশে আজ আমার ৯৪০ তম দিন। পরিবেশ সম্পর্কে আমার বার্তা দেওয়ার জন্য আমি অনেক স্কুল এবং প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি।
রোহান আগারওয়ালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ঝালকাঠির সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দুরন্ত ফাউন্ডেশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তাসিন মৃধা অনিক বলেন, পরিবেশ বিষয়ে সে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছেন। তার উদ্দেশ্য খুবই ভালো। ঝালকাঠিতে সফরে আমি তারে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি।
ঝালকাঠি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হুমায়ুন কবির সাগর বলেন, রোহানের উদ্দেশ্য অসাধারণ। আমাদের দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। দূষণের বিরুদ্ধে কাজ করায় আমরা তাকে সাধুবাদ জানিয়েছি। আমার পরিচালিত পৌর সিটি পার্কে আগত দর্শনার্থীরা যাতে প্লাস্টিক বর্জ্য পুকুরে না ফেলে সে বিষয়ে আমাকে পরামর্শ দিয়েছে। ঝালকাঠি পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন সুলতানা বলেন, ভারতের ওই যুবক পৌরসভায় এসে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে, ঝালকাঠি পৌরসভার আবর্জনা কেন নদীর তীরে ফেলা হয়, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে। আমি তাকে আমাদের ডাম্পিং স্টেশনের জন্য কুনিহাড়িতে জমি ক্রয়ের বিষয়টি অবগত করেছি।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র তরুন কুমার কর্মকার বলেন, রোহানের মতে, এ পৃথিবী শুধু মানুষের বসবাসের জন্যই নয়। পৃথিবীতে প্রাণী এবং উদ্ভিদও রয়েছে । তাই পরিবেশের বিষয়ে অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত। প্লাস্টিক আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।
২০২০ সালের ২৪ আগস্ট ভারতের উত্তরপ্রদেশে বারাণসীর গঙ্গার তীর থেকে হাঁটা শুরু করেছিলেন রোহান। প্লাস্টিকের ব্যবহার বেশি এমন ১৫ দেশে ভ্রমণ করার পরিকল্পনা তার। সব শেষে তিনি যাবেন সাইবেরিয়ায়। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৪৯টি জেলায় গেছেন রোহান। যেখানেই যাচ্ছেন সেখানকার জন প্রতিনিধি, সেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সাধারণ মানুষের সাথে প্লাস্টিকের ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলছেন।