জেলা প্রতিনিধিঃ
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরিক্ষা কেন্দ্র থেকে কেয়া রানী বসু নামে আশাশুনির এক পরিক্ষার্থীকে স্মার্ট ফোনসহ আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১০দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এসএম তারেক সুলতান। জানাগেছে, শুক্রবার (৩ জুন) শেষ ধাপে আশাশুনি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয় সাতক্ষীরা পল্লীমঙ্গল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রসহ সাতক্ষীরার অন্যান্য কেন্দ্রে। স্মার্ট ফোনসহ পরিক্ষার্থী কেয়া রানী বসুকে আটকের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কেন্দ্র সচিব, পল্লীমঙ্গল স্কুল এন্ড কলেজের ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন, পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে কাছে স্মার্টফোনে অন্যাত্র যোগাযোগের অপরাধে পল্লীমঙ্গল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের ১০৭নং রুম থেকে তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এসএম তারেক সুলতান ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ১০দিনের কারাদণ্ড দেন। কেয়া রানী বসু আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের কুঁন্দুড়িয়া গ্ৰামের রবিন্দ্রনাথ দে’র স্ত্রী। শনিবার দুপুরে কেয়া রানী বসুর বাড়ি কুঁন্দুড়িয়া গ্ৰামে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, কেয়া রানী বসুর স্বামী রবিন্দ্রনাথ দে সাবেক প্রত্রিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপিকে দাদা শ্বশুর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকার মানুষের থেকে চাকরী দেওয়ার নাম করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য মমতাজ বেগম জানান, রবিন্দ্রনাথ দে বেউলা গ্ৰামের স্বজলসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তির থেকে চাকরী দেওয়ার নাম করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি আরও জানান, ৫বার এসএসসি পরিক্ষায় ফেল করার পরেও রবিন স্বাস্থ্য বিভাগে বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছে। তার মামা ৪বার আইডি কার্ডের বয়স পরিবর্তন করে ১৪বছর বয়স কমিয়ে বহাল তবিয়তে কুন্দুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে চাকরী করে যাচ্ছে। বয়স কমাতে গিয়ে এত বেশি কমিয়ে ফেলেছে যে, এখন ছোট ভাই বড় ভাই এবং বড় ভাই ছোট হয়ে গেছে। উপজেলা প্রাথমিক এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় এসব অফিসে সে সব সময় অসম্ভবকে সম্ভব করে। রবিন্দ্রনাথ দে দিনাজপুর মেডিকেলের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ই পি আই পরে চাকরিরত থাকলেও প্রায়ই তাকে এলাকায় থাকতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে কেয়া রানী বসুর স্বামী রবিন্দ্রনাথ দে জানান, রাজদন্ড কপালে ছিলো তাই হয়েছে। আমার আর কিছু বলার নেই।
এ বিষয়ে এডিপিও আবু হেনা মোস্তফা কামালের সাথে শনিবার ফোনে কথা হলে তিনি “খুলনাতে মিটিং এ আছি, পরে কথা বলবো” বলে ফোন কেটে দেন।
ডিপিও মোঃ রুহুলআমিন হাওলাদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে কথা বললে দায়িত্বে থাকা বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এসএম তারেক সুলতান প্রতিবেদককে জানান, পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে স্মার্ট মোবাইল ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে বাহিরে যোগাযোগ করা অবস্থায় তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অপরাধ আইন ১৯৮০ অনুসারে ১০দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়েছে। এ চক্রের সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কি-না ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে সেহেতু কতৃপক্ষ চাইলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে পারবেন।