লেখক, কবি ও সাহিত্যিক মোঃ রফিকুল ইসলাম (ভুলু) চাকলাদার উপদেষ্টাঃ
একটি জাতির মূলভিত্তি হচ্ছে,তার নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চা। আর সংস্কৃতির বিকাশই হচ্ছে, একটি দেশ ও জাতি গঠনের মূল শক্তি অথবা উৎপত্তি বা মেরুদন্ড।
বিগত ৫/৭ বছর আগেও যে সকল ব্যক্তিবর্গ নিজস্ব সংস্কৃতি ও ইতিহাস- ঐতিহ্য নিয়ে চর্চা করতেন, কেনো যেনো তাঁরা আজ হারিয়ে যাচ্ছেন ! নিজস্ব সংস্কৃতি আজ অনেকটা হারিয়ে যাওয়া অথবা বিলুপ্তির পথে বলে মনে হচ্ছে। অনেকেই এ-ব্যাপারে উদাসিন এবং মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে আমার ধারণা। আবার কেউ কেউ অর্থ লোভের কারণে জ্ঞানহীনদের বগলে ঢুকে পরেছেন বলেও মনে হয়।
মূলকারণ হচ্ছে – ধর্মান্ধতার অপচর্চা। অবৈধ অর্থশালীদের সামাজিক ও প্রশাসনিক প্রভাব বলয়ে স্থান দখল করে নেতৃত্ব দেয়ার প্রবনতা। নারী অধিকারের নামে অনেকেই ঘর-সংসার রেখে, দলীয় ব্যানার নিয়ে রাস্তায় মিটিং-মিছিল নিয়ে ঘুরে বেড়ানো। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছোট-বড়ো মিলে নেশায় আসক্ত হওয়া। শুধু কিছুটা ক্রিকেট খেলা ছাড়া, বাকী সকল খেলাধুলা প্রায় ধ্বংসের পথে ধাবিত হচ্ছে। তারমধ্যে মোবাইলের বাজে দিকটা অনেক বড়ো ক্ষতির কারণ ইত্যদি।
অতি সামান্য কিছু ব্যক্তিবর্গ বাদে, এসকল বিষয়ে বর্তমানে তেমন কোনো নেতা, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং বুদ্ধিজীবিগণ কারো কোনো ভাষ্য কিংবা লেখা-লেখি অথবা চর্চা কিংবা প্রতিবাদ নেই বললেই চলে। এর বিপরীতে রয়েছে- চাটুকারীতা ও দালালী এবং তোষামদী।
এরপরে একুশে বইমেলা এবং বৈশাখী মেলাকে বন্ধ করার জন্য ধর্মান্ধ গোষ্ঠী হয়তো একদিন রাস্তায় নেমে মিছিল করবে। এরা অনেকেই প্রশাসনের তৃতীয় স্তরের জায়গা দখল করে, ঘুষ এবং হয়রানির মাধ্যমে মানুষকে অতিষ্ট করে তুলছে বলে আমার ধারণা।
দেশ ও জাতিকে একটি অন্ধকার যুগের দিকে ধাবিত করছে বলে আমি মনে করি। যারা রঙিন চশমা পড়ে ঘুরে বেড়ায়, তারা হয়তো অন্যকিছু বলবে। কারণ তারাই হচ্ছে এ সমাজের বড়ো কীট-পতঙ্গ।
এখনও সময় আছে – দেশও জাতিকে তার নিজস্ব কৃষ্টি ও সংকৃতি এবং ইতিহাস-ঐতিহ্যকে রক্ষা করার জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর। না-হয়, এ- বাঙালী জাতিকে অনেক বড়ো খেসারত দিতে হতে পারে।