নিজস্ব প্রতিবেদক।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাসের অফিসের নাকের ডগায় নানান অবৈধ স্থাপনা দোকান পাট গড়ে তুলে ব্যবসা, ভাড়া আদায় করলেও রহস্য জনক ভাবে সেখানে কোন হস্তক্ষেপ না করে উপজেলা মোড়ে রাস্তার ধারে এই প্রচন্ড গরমে একজন নির্মাণ শ্রমিক টেবিলে করে ছাতা ব্যবহার করে লেবুর শরবতের দোকানটি লাথি মেরে ভেঙে দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে।ঘটনার সময় ওই শরবত বিক্রেতা দোকানে ছিল না। দোকানে থাকলে হয়তো উনার নির্দেশ অমান্য করার দুঃসাহস সে দেখাতো না। তার অনুপস্থিতিতে এই গরিব বেচারার প্রায় ২৫ হাজার টাকার মালামাল ভেঙে ফেলাইয়া দেওয়ার ঘটনায় হতবাক হয়েছে উপজেলা বাসী।
পরে বেলা ৪ টার সময় দোকান ভাঙার কারণটা জানতে চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাসের অফিসে গেলে এক ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে অফিসে ডেকে তার বাড়ি ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বেলা ১ টার সময় সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার তিন রাস্তার মোড় নামক স্থানে। কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের চর যমুনা গ্রামের সোহরাব সরদারের পুত্র নির্মাণ শ্রমিক শাহ আলম ওরফে বাপ্পি প্রচণ্ড গরমে কাজ না থাকায় ৭ জনের সংসার নিয়ে অর্ধহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছিল। কোন কাজ না থাকায় উপজেলা মোড়ে অবস্থিত রাস্তার পাশে পেট্রোল বিক্রেতা, চা, ভাজার দোকান, জুতো সেলাই এর দোকানের সাথে রাস্তার পাশে একটি টেবিলে ছাতা মাথায় দিয়ে ২৫/৩০ হাজার টাকার মালামাল তুলে লেবুর শরবত বিক্রি করে সামান্য কয়েক দিনের জন্য জীবিকা নির্বাহী করছিল।
বিষয়টি নিয়ে তাকে সতর্ক না করে গত বৃহস্পতিবার সে বাজারে লেবু আনতে যাওয়ার সুযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাস এবং উপজেলা কমিশনের ভূমি আজাহার আলী এসে বেলা ১টার দিকে লাথি মেরে তার দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলে দিলেও পাশের অন্যান্য দোকানে কোন হস্তক্ষেপ করেনি। পরে বিষয়টি জানতে শাহ আলম ওরফে বাপ্পি বেলা ৩ টার সময় বিষয়টির কারন জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাসের অফিসে যায়। কিন্তু সেখানে তাকে ১ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে বিকাল ৪টার সময় অফিসে ঢোকে। সে জানতে চায় কি অপরাধে তার দোকান টি ভাঙ্গা হয়েছে। উত্তরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার অনুমতি না নিয়ে কেন দোকান দিয়েছে? প্রয়োজন হলে তার বাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে বলে ভুক্তভোগী শাহ আলম বাপ্পি সাংবাদিদের জানায়। সে আরো জানান এই টাকাগুলো হলে আমার ৭ জনের সংসারটা হয়তো কয়েকদিন চলত তবে আমাকে বললে আমি স্বেচ্ছায় টেবিলটা সরিয়ে বাড়িতে নিতাম। কিন্তু আমি দোকানে না থাকার সুযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমার দোকানটি ভেঙে গুড়িয়ে দিলেও আশে পাশের রাস্তার উপর কোন অবৈধ দোকানদারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
বিষয়টি আমি তদন্ত পূর্বক জেলা প্রশাসক মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। গত মাঝখানেক আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাকের ডগায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আসলে তিনি সেগুলো উচ্ছেদ না করতে দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে তখনো নানান আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে। এমনিতেই উপজেলা সদরের পূর্ব পার্শ্ব জুড়ে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের কর্মচারী, কর্মকর্তা সহ আরো অনেক জন এই সমস্ত সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে বাসা বাড়ি, দোকানপাট ভাড়া দিয়ে বছরে হাজার হাজার টাকা কামিয়ে আসলেও দেখার কেউ নাই। অথচ যত দোষ নন্দ ঘোষ গরিব শরবত বিক্রেতা ওয়ালার। বিষয়টি সম্পর্কে সত্যতা জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাসের মুঠোফোন একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।