হাফিজুর রহমান,কালিগঞ্জ থেকে :
দীর্ঘ ২ বছর ঝুলে থাকা সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বহুল আলোচিত মোজাহার মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং নৈশ প্রহরী নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব এবং বিদ্যুৎসাহী সদস্যের স্বাক্ষর ছাড়া নিয়োগ-বাণিজ্য সম্পন্ন হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডের প্রশ্নপত্র তৈরি নিয়ে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা হতে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এবং নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব সম্পা গোস্বামী এবং বিদ্যুৎসাহী সদস্য অত্র স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোসলেম আলী প্রতিবাদ করে কোন লাভ হয়নি। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা এবং সহকারী কমিশনার ভূমি আজাহার আলীর উপস্থিতিতে নিয়োগ বোর্ডের উপস্থিতি খাতায় জোরপূর্বক স্বাক্ষর সম্পন্ন করলেও লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার নিয়োগ কার্যক্রমে এই ২জন প্রতিনিধি অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্বাক্ষর করেনি।
মোজাহার মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় এ দীর্ঘ ২ বছর ঝুলে থাকা অনেকবার দিন পরিবর্তন করে গতকাল প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, এবং নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ পরীক্ষা সকাল ১০টার সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু রহস্যজনক হলেও সত্য তার আগে থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে শ্রীকলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস সেলিম এবং মোজাহার মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর কম্পিউটার শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও নৈশ প্রহরী পদে মনিরুল ইসলামকে নির্বাচিত করে রাখে। গতকাল নিয়োগ বোর্ডের পাতানো নিয়োগ বাণিজ্যে আলোচিত এই ৩জনকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখাইয়ে নিয়োগ সম্পন্ন ঘোষণা দেওয়া হয়। আর এই নিয়োগ ঘোষণা দেওয়া কে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে নানান আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
নিয়োগ বোর্ডের ২জনের স্বাক্ষর ছাড়া কিভাবে নিয়োগ সম্পন্ন হয় এ প্রশ্ন সুধী মহলের। তবে এ প্রসঙ্গে অত্র বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষিকা ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব সম্পা গোস্বামী সাংবাদিকদের জানান পাতানো নির্বাচন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং মৌখিক প্রশ্নপত্র তৈরি নিয়ে সকাল থেকে তিনি প্রতিবাদ করে আসছেন। তারপরও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের প্রতিনিধি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর চাপে নিয়োগ বোর্ডের উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষর করলেও নিয়োগ কার্যক্রমে স্বাক্ষর করেনি বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন আগে থেকে এই ৩টি পদে নিয়োগের জন্য অত্র স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শাহাদাত হোসেন মোটা অংকের টাকা নিয়ে পাতানো প্রহসনের নিয়োগ সম্পন্ন করেছে আমি এর প্রতিবাদ করি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সহকারি কমিশনার (ভূমি) আজাহার আলী জানান নিয়োগ বোর্ডে তাদের কোন কার্যক্রম নাই শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সহায়তা করা। নিয়োগ বোর্ডের সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান তিনি নিয়োগ বোর্ডের নামমাত্র একজন সদস্য তার উপস্থিতি ছাড়া কিছু করার নাই সবকিছুর দায় দায়িত্ব ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির। এ প্রসঙ্গে আরো সত্যতা জানার জন্য অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি শাহাদাত হোসেনের নিকট একাধিকবার ফোন দিলেও তার ফোন অন্য ব্যক্তি রিসিভ করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।