মো রাসেল সরকার গজারিয়া প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে অভিযোগ উঠেছে, মারা যাওয়া নবজাতকের বাবা এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে চাইলেও তাকে সমঝোতা করতে বাধ্য করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রসব বেদনা নিয়ে শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার লুটেরচর ইউনিয়নের চর কাঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহর স্ত্রী নাসরিন আক্তার (১৯)কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
নাসরিনের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘টেস্ট রিপোর্ট এবং শারীরিক পরীক্ষা শেষে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায়, রোগীর অবস্থা স্বাভাবিক এবং পেটের বাচ্চা ভালো আছে। সিজারিয়ান অপারেশনের দরকার নেই; নরমাল ডেলিভারি হবে। এদিকে শনিবার সকাল আটটার দিকে আবার প্রসব বেদনা উঠলে নরমাল ডেলিভারি চেষ্টা করেন হাসপাতালের নার্সরা। তখন সেখানে কোন চিকিৎসক ছিলেন না। পরবর্তীতে রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকলে পারভীন সুলতানা নামে একজন চিকিৎসক সেখানে এসে উপস্থিত হন। সকাল পৌনে দশটার টার দিকে আমাদের জানানো হয়, ছেলে বাবু হয়েছে তবে জন্মের কিছুক্ষণ পরেই বাচ্চা মারা গেছে। বাচ্চার নাকি শারীরিক সমস্যা ছিল। তবে, আমরা বাচ্চার মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। আমাদের ধারণা, নার্স এবং চিকিৎসকের অদক্ষতার কারণেই বাচ্চাটি মারা গেছে। যদি বাচ্চা বা বাচ্চার মায়ের কোন প্রকার শারীরিক সমস্যা থাকতো, তবে সেটা পরীক্ষাতে ধরা পড়তো।‘
এদিকে প্রসূতির স্বামী মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা ভর্তি করানোর পর থেকে বলে আসছি, যদি অবস্থা আপনারা আশঙ্কাজনক মনে করেন, তবে আমাদের বলে দেন। আমরা ভালো কোন হাসপাতালে চলে যাবো। কিন্তু তারা আমাদের জানায়, বাচ্চা ও বাচ্চার মায়ের অবস্থা ভালো আছে এবং নরমাল ডেলিভারি হবে। আজকে বলছে, এ ধরনের বাচ্চা নাকি বাঁচানো খুব কঠিন।‘
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে সে সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.পারভিন সুলতানার সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করা হলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তিনি ডিউটি শেষ করে বাসায় চলে গেছেন। পরে তার মুঠোফোন একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবাশ্বেরা বিনতে আলম বলেন, ‘এ ব্যাপারে যদি কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আমি সেটি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। বিষয়টিতে কারো কোনও গাফিলতি আছে কিনা আমি খতিয়ে দেখবো।‘
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, নবজাতকের বাবাকে চাপের মুখে সমঝোতা করতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি প্রথমে আইনি পদক্ষেপ নিতে চাইলেও পরবর্তীতে তিনি এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না বলে লিখিত দিয়েছেন।