গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ধানের জমিতে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে প্রতিপক্ষের দুইজনকে হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী হাফিজার রহমান (৩৯) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৩, সিপিসি-৩ গাইবান্ধা।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে র্যাব-১৩, সিপিসি-৩ গাইবান্ধা এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১৩, রংপুরের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
এরআগে বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন ইছাপুর বরশা বাজার এলাকা এই পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেন তারা।
গ্রেপ্তারকৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামী হাফিজার রহমান ওই উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
র্যাব-১৩, রংপুরের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের হযরত আলীর সাথে একই গ্রামের আব্দুল জলিলের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে হযরত আলী আমন ধান চাষ করে। আদালতে মামলার রায় নিজের পক্ষে পেয়ে ২০১৬ সালের ১২ নভেম্বর আব্দুল জলিল তার লোকজন নিয়ে ধান কাটতে যায়। ধান কাটার বিষয়টি আগেভাগে জানতে পেরে হযরত আলী গোপনে জমির পার্শ্ববর্তী তার রাইচ মিল থেকে বিদ্যুতের তাঁর পেতে সম্পূর্ণ জমি ঘিরে রাখে।
পরে ওইদিন সকালে আব্দুল জলিলের আত্মীয় তসলিম উদ্দিন বেশকিছু নারী-পুরুষ শ্রমিক নিয়ে ওই জমিতে ধান কাটতে নামলে প্রথমে তসলিম উদ্দিন বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুতায়িত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার চাচাতো বোন মর্জিনা খাতুনও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের দুজনেরই মৃত্যু হয়।
পরে এ ঘটনায় নিহত তসলিম উদ্দিনের বাবা মফিজল হক বাদি হয়ে ৭ জনকে আসামি করে ওইদিন রাতেই সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই নৃশংস হত্যাকান্ডে অপরাধীদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সাত আসামির মধ্যে আদালত তিন সহোদর আসামির মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। রায় ঘোষণার পর থেকেই আসামি হাফিজার রহমান পলাতক ছিলেন।
কমান্ডার আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী দীর্ঘদিন যাবত নিজেকে আত্মগোপনে রেখে বারবার তার অবস্থান পরিবর্তন করতেন। কিন্তু র্যাব-১৩ গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে আসামী হাফিজার রহমানের খোঁজার কার্যক্রম চালু রেখেছিল। পরে বুহস্পতিবার আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৩ ও কুমিল্লা র্যাব-১১ এর যৌথ আভিযানিক দল কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার ইছাপুর বরশা বাজার এলাকা গভীর রাতে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মৃত্যু দন্ডাদেশপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভূক্ত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী নিজেকে আত্মগোপনে রাখার কথা স্বীকার করেছে। সকল আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহনের জন্য আসামীকে ঘটনাস্থল থানা সুন্দরগঞ্জে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান র্যাব-১৩, রংপুরের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
সংবাদ সম্মলনে র্যাবের অন্যান্য কর্মকর্তা, সদস্য ও জেলার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন