শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চারঘাট প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে ওসির মতবিনিময় সভা  ডাক বাংলা সাহিত্য একাডেমি কর্তৃক লেখক পুরস্কার-২০২৪ পাচ্ছেন যারা মোল্লাহাটে বিষাক্ত জেলি পুশ করা ২০০ কেজি চিংড়ি জব্দ সাবেক সাংসদ খন্দকার নাসিরের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের বাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ  জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা সচেতনতামূলক সভা বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত  যশোরে উন্নয়ন সংস্থা “রূপান্তর”এর আয়োজনে মানব পাচার প্রতিরোধ  বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত  বোয়ালখালীতে ৩’শ লিটার মদসহ গ্রেপ্তার ১ হাটহাজারীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য র‍্যালিতে মীর হেলাল বাংলাদেশের সংকটে বারবার কান্ডারীর ভূমিকায় জিয়া পরিবার হাটহাজারীতে নাছির নামক আওয়ামী লীগ. নেতা গ্রেপ্তার!

চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২২ বার পঠিত

এম মনির চৌধুরী রানা, চট্টগ্রামঃ

চট্টগ্রামে শেফালী ঘোষ ছিলেন একজন বাংলাদেশি আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী। তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরেছেন, যা উপমহাদেশের সংগীতকে সমৃদ্ধ করেছে। প্রায় পাঁচ দশকের সংগীত জীবনে তিনি প্রায় সহস্রাধিক গান গেয়েছেন। তার গাওয়া গান নিয়ে দুই শতাধিকের বেশি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বেশ কয়েকটি বাংলা চলচ্চিত্রের গানেও প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের প্রায় ২০টিরও বেশি দেশে সংগীত পরিবেশন করেছেন। তার গাওয়া বিখ্যাত গানের মধ্যে রয়েছে এম এন আখতার রচিত এবং সুরারোপিত ‘যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম’ আহমেদুল হক সিদ্দিকী রচিত ও সুরে ‘ও রে সাম্পানওয়ালা’, মলয় ঘোষ দস্তিদার রচিত ও সুরে ‘ছোট ছোট ঢেউ তুলি’ প্রভৃতি। তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাংস্কৃতিক ভূমিকা রেখেছেন। সংগীতের পাশাপাশি যাত্রা এবং মঞ্চনাটকেও তার নিয়মিত অংশগ্রহণ ছিল।

শেফালী ঘোষ ১৯৪১ সালে ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নের কানুনগোপাড়ায় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই তার শৈশব কেটেছে। ৫ ভাই ও ৫ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার পিতার নাম কৃষ্ণ গোপাল ঘোষ এবং মাতার নাম আশালতা ঘোষ। শেফালী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী শেষে ভর্তি হন স্থানীয় মুক্তাকেশী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।

পরিবারের অনুপ্রেরণায় বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে তার গান গাওয়ার এবং শেখার সূত্রপাত ঘটে। তার গানের প্রথম ওস্তাদ ছিলেন তেজেন সেন। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ ওস্তাদ শিবশঙ্কর মিত্র, জগদানন্দ বড়ুয়া, নীরদ বড়ুয়া, মিহির নদী, গোপালকৃষ্ণ চৌধুরীসহ বিভিন্ন সংগীতজ্ঞের কাছে তিনি শিক্ষাগ্রহণ করেন। শিল্পীজীবনের সূচনালগ্নে প্রথমে রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত এবং আধুনিক গান শিখতে শুরু করলেও এক পর্যায়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামের লোকসংগীত- অর্থাৎ আঞ্চলিক গান, পল্লীগীতি, মাইজভা-ারি গান, পীর মুর্শিদের শানে রচিত গান গাওয়ার দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেন। ১৯৬৩ সালে, শেফালীর তখন ২২ বছর। চট্টগ্রাম বেতারের তৎকালীন আঞ্চলিক পরিচালক শেফালী ঘোষ এবং আঞ্চলিক গানের সম্রাট শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবকে আঞ্চলিক ভাষায় গান গাইতে প্রস্তাব জানালেন। এতে দুজনই রাজি হলেন এবং তাদের সেই দ্বৈত কণ্ঠের গান ইথারে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।

১৯৭০ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে শেফালী ঘোষ শিল্পী হিসেবেই অংশ নেন। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে গান গেয়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সাহায্য সংগ্রহ করেন। ১৯ বছর বয়সে শেফালী ঘোষ গান শেখার জন্য চট্টগ্রাম শহরে আসেন। সেখানে তার পরিচয় ঘটে সংগীতানুরাগী ননী গোপাল দত্তর সঙ্গে। পরবর্তীতে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের বিয়ে হয়। শেফালী ঘোষের এক ছেলে রয়েছে। ২০০৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেফালী ঘোষ মারা যান। শেফালী ঘোষ জীবদ্দশায় তিনটি এবং মৃত্যুর পর একটি জাতীয় পুরস্কার পান। সেগুলো হচ্ছে। ১৯৯০ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক পদক। ২০০২ বাংলা একাডেমি আজীবন সম্মাননা পদক। ২০০৩ শিল্পকলা একাডেমি পদক। ২০০৬ একুশে পদক।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।