মোঃ রায়হান আলী নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁয় স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে নওগাঁ মোকাম বিজ্ঞ বদলগাছি পারিবারিক আদালতে মামলা করেছেন আমিনুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুন ২০১৯ইং তারিখে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের মৃত সুজাউল হক এর ছেলে মোঃ আমিনুর রহমানের সাথে কিসামত পাঁচঘরিয়া গ্রামের মোঃ তৌহিদুল ইসলামের মেয়ে তুলি পারভীন এর বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। বিবাহে ৫০ হাজার টাকার দেনমোহর ধার্য করা হলে স্বর্ণালঙ্কার বাবদ ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে ৫ হাজার টাকা বকেয়া রাখিয়া তাদের বিবাহ রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রাখিয়া সংসার পরিচালনা করিয়া আসছিল তারা। হঠাৎ গত ১৭ ই মার্চ ২০২২ তারিখে বাদী আমিনুর রহমান বিশেষ কাজে বাড়ির বাইরে ছিলেন এ অবস্থায় বিবাদীর বাবার বাড়ি থেকে কে বা কাহারা এসে বিবাদী তুলি পারভিনকে ভুল বুঝিয়া বিবাদীর পিত্রালয়ে নিয়ে যায়। পরে আমিনুর রহমান বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, পারভিন বেড়াবার কথা বলে তার বাবার বাড়ি চলে গিয়েছেন।
এমতা অবস্থায় যাতে ওই দিন রাতে বিবাদীকে নেওয়ার জন্য বাদী তার শশুর বাড়িতে গেলে বিবাদীর পিত্রালয়ের লোকজন বাদীকে অপদস্ত করিয়া বিবাদীর সহিত দেখা করিতে না দিয়া বাদীকে তাড়াইয়া দেয়। এরপর বাদী বিভিন্নভাবে বিবাদীর সহিত যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে বিবাদীর পিতামাতা তা করতে দেয় না। এমতাবস্থায় বাদী গত ২৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে তাদের সংসারে বিবাদীকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে মাতব্বর সহ বিবাদীকে লইতে গেলে বিবাদী বাদীকে দেখে তাহার সাথে আসতে চাইলে বিবাদীর পিতা বিবাদীকে কিছুতেই আসতে দিবে না মর্মে বিবাদীকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং বাদীপক্ষকে ফিরিয়ে দেন। বর্তমানে বিবাদী ছাড়া বাদীর সংসার একেবারে অচল হইয়া পড়িয়াছে। এখনো বিবাদীর সহিত বাদীর দাম্পত্য সম্পর্ক বহাল আছে মর্মে তাহা পুনরুদ্ধার এর ডিগ্রী প্রার্থনায় অত্র মোকদ্দমা দায়ের করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিবাদী তুলি পারভীন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ২য় বিবাহের কথা অস্বীকার করে বলেন, তাকে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে এবং তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। আমিনুর একটি ভূয়াকাবিন দেখিয়ে আমাকে স্ত্রী বলে দাবি করে। কিন্তু আমি ঐ কাবিনের জন্য আবার তাকে ডিভোর্স দিয়েছি।
এবিষয়ে বাদী আমিনুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, মামলা সূত্রে যাহা বর্ণনা করা হয়েছে তাহা সত্য। বিবাদীকে তার পিতা-মাতা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব অস্বীকার করতে বাধ্য করছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এছাড়াও তিনি জানান, তুলি পারভিন এর সাথে আমার ১ম বিয়ে হয় ২০১৩ইং সালের ১০ই ডিসেম্বর। এর পর তুলি আমাকে ১৩-১২-১৮ইং সালে ডিভোর্স দেয়।
এর পরবর্তীতে সে আমার সাথে নতুন ভাবে সংসার করতে ফোনে কথা বলে আর যদি আমি তাকে বিয়ে না করি তাহলে তুলি আত্নহত্যার করবে মর্মে আমাকে হুমকি দেয়। আমি বাধ্য হয়ে তার বাবার সাংসারিক অবস্থার কথা ভেবে আমি তাকে পুনরায় ২০-৬-২০১৯ইং সালে তার আপন চাচা হাসানের বাড়িতে ২য় বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বিয়ে পরে বেশ কিছু দিন আমার সাথে ঘরসংসার করার পরে সে আমার কাছে চাকুরী করার আবদার করে।
বিয়ের পরে তুলি মৌসুমী এনজিওতে চাকুরী নেয়। পরে আমার বাড়ি থেকে হঠাৎ একদিন
আমাকে না জানিয়ে তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। একটা সময় জানতে পারলাম সে চাকুরী ছেড়ে দিয়েছে এবং আমার সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
আমি আমার সংসারে তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য গত ২৫-৪-২২ইং তারিখে বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হই এবং দাম্পত্য পুনরুদ্ধারে বদলগাছি পারিবারিক আদালতে মামলা করি। আমি তাকে আমার বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আবারও সংসার করতে চাই।