মোঃ রায়হান আলী, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মহাদেবপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ অফিসে দলিল রেজিস্ট্রির জন্য ঘুষ হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন ওই অফিসের কর্মচারী অফিস সহকারী নাসির উদ্দীন। তিনি প্রতিটি দলিল রেজিস্ট্রির জন্য সাব-রেজিস্ট্রারকে দিতে হবে এমন অযুহাতে ২ হাজার টাকা করে ঘুষ হিসেবে আদায় করছেন।
সম্প্রতি উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এজলাস কক্ষে ঘুস লেনদেনের একটি ভিডিও বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যকর উদ্বেগ জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা নিরব। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এজলাস কক্ষে এজলাসের সামনের চেয়ারে বসা অফিস সহকারী নাসির উদ্দীন সেখানে থাকা এক ব্যক্তিকে বলছেন, দ্ইু হাজার টাকা দেন, স্যার খাবে। নিরুপায় হয়ে পরক্ষণেই ওই ব্যক্তিটি পকেট থেকে টাকা বের করে ৪টি পাঁচশ’ টাকার নোট নাসির উদ্দীনের হাতে দেন। তিনি টাকাগুলো আবারও গুনে নিয়ে নিজের টেবিলের ড্রয়ারে রাখেন এবং প্রশ্ন করেন কত নম্বর? ওই ব্যক্তিটি টেবিলের উপর থাকা তালিকার দিকে ঝুঁকে নাম্বারটি দেখিয়ে দিলে নাসির উদ্দীন সেখানে টিক চিহ্ন দেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের অফিস সহকারি নাসির উদ্দীন ভিডিওটি তার নিজের বলে স্বীকার করলেও তিনি জানান, তিনি শুধুমাত্র নকল নবিশদের ফিস বাবদ দলিলপ্রতি নগদ ২৪০ টাকা গ্রহণ করেন। এ টাকা ছাড়া অন্য কোন টাকা তিনি নেন না। কিন্তু ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ২ হাজার টাকা কেন নিলেন? এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. মনিরুজ্জামানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি আত্রাইয়ে আছেন। মোবাইলে এসব কথা বলা যাবে না। আগামী সপ্তাহে অফিসে আসেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত নাসির উদ্দীন বছর দুয়েক আগে পদোন্নতি পেয়ে অফিস সহকারি হয়েছেন।
কিন্তু তিন যুগের অধিক সময় ধরে তিনি এ অফিসের সাথে যুক্ত। অফিস সূত্র জানায়, পাশ্ববর্তী মান্দা উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের জামদই গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দীন ১৯৮৪ সালে নকল নবিশ হিসেবে এ অফিসে যোগদান করেন। ২০১৬ সালে মোহরার পদে এবং বছর দুয়েক আগে পদোন্নতি পেয়ে অফিস সহকারি হন।