মোঃ রায়হান আলী, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মান্দায় আফিমা সুলতানা মিতু নামে এক নারীর প্রতারকের ফাঁদে আটকা পড়ে সর্বশ্রান্ত হয়েছে কয়েকটি পরিবার। এমন অভিযোগ টপ অফ দা টাউনে পরিণত হয়েছে। এতে উপজেলা জুড়ে চাঞ্চল্যরকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ওই নারী প্রতারক উপজেলার ছোট বেলালদহ গ্রামের মেডিকেল মোড় এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কেরানী আকবর হোসেনের মেয়ে। মিতুর প্রথম স্বামী সামসুল আরেফিন সুজন সহ কয়েক জন ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, আফিমা সুলতানা মিতু বিত্তবান, বড় ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদেরকে টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ পেতে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। এ পর্যন্ত মিতু প্রায় ৫/৬ জন যুবককে প্রেমের জালে জড়িয়ে কাওকে বিয়ে করে, আবার কাওকে ধর্ষণ মামলার ভয় দেখিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। আফিমা সুলতানা (মিতু) এর প্রতারণার ফাঁদে সর্বশান্ত হয়েছেন অনেক পরিবার। অপরদিকে প্রতারণার টাকায় উপজেলার মেডিকেল মোড় এলাকায় তিনতলা আলিশান বাড়ি করেছেন মিতু। এভাবে একের পর এক প্রতারণা করলেও মামলার ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। সর্বশেষ গত (৩০ জুন শুক্রবার) মান্দা উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে ও মান্দা কারিগরি ও কৃষি কলেজের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর ফজলে রাব্বী (৩০) এর বিরুদ্ধে ভুয়া প্রেগনেন্সি রিপোর্ট দেখিয়ে ধর্ষণ মামলারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই মামলায় ফজলে রাব্বীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রাব্বীর পরিবার এবং ৭নং প্রসাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, উপজেলার আইডিয়াল ক্লিনিক থেকে ভূয়া পেগনেন্সী রিপোর্ট সংগ্রহ করে রাব্বীকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। যা ঘটনার সাথে কোন মিল নেই। স্থানীয়রা জানান ইতিপূর্বে তিনি প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মান্দা উপজেলার সামসুল আরেফিন সুজনের নিকট থেকে প্রায় ১০ লক্ষ, রাজশাহীর গোলাম মোস্তফার নিকট থেকে ২০ লক্ষ, চট্রগ্রামের হাসানউল্লাহ সিদ্দিকীর নিকট থেকে ২২ লক্ষ, নওগাঁর পাহাড়পুরের মাসুদ রানার নিকট থেকে ১৩ লক্ষ, দিনাজপুরের সাব্বির হোসেনের নিকট থেকে ১৭ লক্ষ এবং উপজেলা কুসুস্বা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের নিকট থেকে ১২ লক্ষ সহ আরো অনেকের নিকট থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন টাকা, স্বর্ণালংকার, প্রাইভেটকার সহ দামি আসবাবপত্র এমন অভিযোগও রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আফিমা সুলতানা মিতুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রতারণার ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায়ের ঘটনা সম্পন্ন মিথ্যা। তবে একাধিক বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন তিনি । ভুয়া প্রেগনেন্সী রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। ভুয়া প্রেগনেন্সি রিপোর্টের ব্যাপারে আইডিয়াল ক্লিনিকের মালিক আমিনুল ইসলাম কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিতু নামে কোন মহিলা আমার ক্লিনিকে পেগনেন্সী টেষ্ট করেনি। প্রতিষ্ঠানের নামে ভূয়া প্যাড ও লঘু ব্যবহার করে তিনি এরকম কাজ করছেন। এ ঘটনায় মিতুর প্রথম স্বামী সামসুল আরেফিন সুজন জানান, ১ বছর সংসার করে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যে স্বর্ণ অলংকার হাতিয়ে নিয়ে আর সংসার করেনি। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে সেখানেও ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মিতু। এভাবেই একের পর এক বিয়ের অজুহাতে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে অথবা ধর্ষণ মামলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেন টাকা। । এ ব্যাপারে মান্দা থানার ওসি (তদন্ত) মেহেদী মাসুদ জানান, মিতুর প্রতারণার বিষয়টি আমাদের জানা নেই, যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোঃ রায়হান আলী মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ