এম মনির চৌধুরী রানা, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বাসিন্দা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। কিন্তু আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের নির্দেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হলেও নিজেই ভোট দিতে পারেননি ওই আসনে। চকরিয়া-পেকুয়ার ইবরাহিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতির জাফর আলমের বিরুদ্ধে। কিন্তু নির্বাচন চলাকালীন দুপুরে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
এরপরও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জাফর পান ৫২ হাজার ৮৯৬ ভোট। চকরিয়া উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম এবং পেকুয়া উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউএনও থোয়াইহলা চৌধুরী জানান কক্সবাজার-১(চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৮৬৪ জন। মোট কেন্দ্র রয়েছে ১৫৮টি। এসব কেন্দ্রের মধ্যে ৩টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কর্মকর্তা।
১৫৫টি কেন্দ্রে ১ লাখ ১০ হাজার ১৪৭ জন ভোটার ভোট প্রয়োগ করেন। তার মধ্যে বাতিল হয়েছে ২ হাজার ৩৬৭টি ভোট। ফলে মোট বৈধ ভোট ধরা হয় ১ লাখ ৭ হাজার ৭৮০টি। স্থগীত করা ৩ কেন্দ্র হলো চকরিয়ার চরণদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ ফুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মরংগোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই ৩ কেন্দ্রে প্রায় ৯ হাজার ভোট রয়েছে।
জানা গেছে,বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম পেয়েছেন ৮১ হাজার ৯৫৫ ভোট। ট্রাক প্রতীকের জাফর আলম পান ৫২ হাজার ৮৯৬ ভোট। এই আসনে আরও ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলে ও তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, ২০১৮ সালে বহু আশা নিয়ে চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাফর আলমকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছিল।
কিন্তু গত ৫ বছরে তিনি এলাকায় কোনো উন্নয়ন করেননি। তিনি নিজের আখের গুছিয়েছেন। নিজের কাছের লোকজনকে দিয়ে ‘জাফর লীগ’ সৃষ্টি করেছেন। মানুষের জমি দখল, চিংড়িঘের দখল, গরু চোর, ডাকাতদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এলাকার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাই মানুষ জাফর আলমের বিরুদ্ধে জবাব দিয়েছে ব্যালেটের মাধ্যমে।
নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন এই বিজয় জুলুমবাজের বিরুদ্ধে, দখলবাজের বিরুদ্ধে, চুরি-ডাকাতের বিরুদ্ধে। আমি নিজে ভোট দিতে না পারলে ও এই এলাকার মানুষ এভাবে আমাকে ভোট দিবে, আমি কখনোই কল্পনা করতে পারিনি। তাই এই আসনের ভোটার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ সকলের কাছে প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণার সময় আমি যেসব ওয়াদা দিয়েছি, তা পালন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। এলাকায় উন্নয়নের জন্য যা করা দরকার সবই করবো। কোনো চোর-ডাকাত, জমি, চিংড়িঘের দখলবাজ এবং সন্ত্রাসীদের জায়গা হবে না।