সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সেনাবাহিনী শেখ হাসিনাকে দুটি চয়েস দিয়েছিল : মিজা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাহিরপুর ভলিবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত ছয় মাস বন্ধ থাকার পর ধানুয়া কামালপুর স্থল বন্দর দিয়ে পাথর আমদানি শুরু সাতক্ষীরা পৌর নারী সুরক্ষা ফোরামের ত্রৈ-মাসিক সভা অনুষ্ঠিত বোয়ালখালীতে চোরাই মদসহ গ্রেপ্তার পটিয়াতে বাসের পেছনে বাসের ধাক্কা,নিহত ২ গাইবান্ধায় জামায়াতের মিছিলে বিএনপির হামলা, ২০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, আহত ৩০ দৈনিক লোকবাণী’র পঞ্চম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে প্রতিনিধি সম্মেলন কামরুজ্জামান কে এমপি’ হিসেবে দেখতে চান তাহিরপুর উপজেলাবাসী। মাহেন্দ্র – বাস সংঘর্ষে বোয়ালখালী যুবক নিহত

পড়া দিতে দেরি হওয়ায় মাদরাসা ছাত্রের মাথা ফাটালেন প্রধান শিক্ষক

মোঃ সবুজ খান মির্জাপুর টাঙ্গাইলঃ
  • আপডেট সময় রবিবার, ২১ মে, ২০২৩
  • ৪৯৯ বার পঠিত

 

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ

পড়া দিতে দেরি হওয়ায় মো. আসিফ মিয়া (১২) নামের এক মাদরাসা ছাত্রের মাথা ফাটালেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হাসান ।এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার “মারকাযুল উলূম মাদরাসায়”।মাদরাসাটি উপজেলার নলুয়া বাসস্ট্যান্ডের সাথেই দক্ষিণ পাশে অবস্থিত।মাদরাসাটিতে তিন বিভাগে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করানো হয় বলে জানা যায়।

মাদরাসা ছাত্র মো. আসিফ মিয়া ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোমবার (১৫ই মে) প্রতিদিনের মতই চলছিল ক্লাশ।ঐদিন দুপুর বেলা ছিল আসিফের ক্লাশ।ক্লাশে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হাসান।আসিফ পড়া দিতে দেরি হওয়ায় প্রধান শিক্ষক তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে গালে থাপ্পর মারে,পরে তার রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আসিফের পাঞ্জাবির কলারে ধরে উচু করে ক্লাশের ফ্লোরে আছাড় মারে।ফেটে যায় মাথা,ঝরতে থাকে রক্ত। আসিফ অজ্ঞান হয়ে যায়।কিছুক্ষন পর তার জ্ঞান ফিরলে শরিফ নামের এক শিক্ষক তাকে উদ্ধার করে নলুয়া ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় এবং রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আসিফকে বলেন তোকে একেবারে মেরে ফেলার দরকার ছিল।মাথায় করেন শেলাই।নিয়ে আসেন মাদরাসায়।ঘটনার দিন থেকে তিন দিন পরে আসিফের পরিবার জানতে পারে তার খালাতো বোনের নিকট থেকে এমন ঘটনা।তার খালাতো বোনের ছেলেও পড়ে একই মাদরাসায়।বুধবার আসিফের খালাতো বোন তার ছেলেকে দেখতে গেলে দেখে আসিফের এমন অবস্থা। আসিফ প্রথমে স্বীকার না করলেও পরে সব খুলে বলে তার খালাতে বোনের নিকট।আসিফকে শিক্ষকরা বলেছিল,কেউ জানতে চাইলে বলবা খেলতে গিয়ে মাথা ফেটে গেছে। কিন্তু আসিফ সব বলে দিয়েছে তার খালাতো বোনের নিকট। পরে তার খালাতো বোন আসিফের পরিবারকে জানায়।আসিফের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার আমরাতৈল এলাকায় তার বাবা মো. হুমায়ুন মিয়া ব্রুনাই প্রবাসী।তারা এক বোন ও এক ভাই।বড় বোন বিয়ে হয়ে গেছে।মা-বাবার স্বপ্ন এখন একমাত্র ছেলে আসিফ।পরে তার পরিবার খবর শোনে বৃহস্পতিবার সকালেই ছেলেকে দেখতে যান তার গর্ভধারিনী মা।গিয়ে দেখেন ছেলের শরীরে জ্বর।গেলেন তার চাচাও।আসিফকে নিয়ে আসতে চাইলেও পরীক্ষার অজুহাত দেখিয়ে আসিফকে ছুটি দেইনি শিক্ষকরা।ফিরে আসে পরিবার।পরদিন শুক্রবার আবার তাদের একমাত্র সন্তানকে নিতে যান মাদরাসায়।আসিফের মা সিদ্ধান্ত নেন তার ছেলেকে এমন পাষন্ড শিক্ষক দিয়ে আর পড়াবেননা।আসিফকে নিয়েই চলে আসলেন তার মা ও চাচা।ঘটনার এমন বর্ণনাই দিচ্ছিলেন আসিফ ও তার পরিবার।আসিফ আরো বলেন,আর প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা ছাত্রদের বেত দিয়ে মারধর করে মলম লাগিয়ে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির একাধিক অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।এটা ঠিক না!

স্থানীয়রা জানান,আমরা শুনেছি এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।তাদের যদি ভালো কথা বলি তাহলে তারা রাগ করে,পরে আর বলি না।

আসিফের চাচা জাহাঙ্গীর আলম বলেন,এমন ঘটনায় কেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায় নি?আমার ভাতিজা যদি মারা যেত তাহলেও কি আমাদের বলত না!ভেজা সুরে এমন কথাই বলছিলেন তিনি।তিনি আরো বলেন,আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।কারন আমার ভাতিজা যদি মারা যেত তাহলে তো শিক্ষকরা তাকে গুম করে ফেলত।

মাদরাসাটির শিক্ষক মো. শরিফ মিয়ার সাথে (০১৭৬০-৯৪২৯৩০) যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,আসলে আমি এটা ইচ্ছা করে করি নাই।আর আসিফের পরিবারকে না জানানোটা আমাদের ঠিক হয় নাই।এই জন্য আমরা তার পরিবারের নিকট ক্ষমা চেয়েছি।এখন আবার কেন সাংবাদিকদের বলেছে জানিনা।তবে আমাদের ভুল হয়েছে।

এ বিষয়ে সখিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা আলম বলেন,ঘটনা সম্পর্কে ছাত্রের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে।তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।