শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

পদ্মাপাড়ে দুই বাদশা, এমপি ছেড়ে স্বতন্ত্রকে সমর্থন

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৯১ বার পঠিত
ফজলে হোসেন বাদশা (বাঁয়ে) ও শফিকুর রহমান বাদশা। ছবি: সংগৃহীত

টানা ১৫ বছর ধরে রাজশাহী-২ (সদর) আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসন বাদশা। শরিকদের আসন ভাগাভাগিতে এবারও তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তবে প্রচারণায় মহাজোটের অন্য কোনো দলের নেতাকর্মীকে তাঁর পক্ষে মাঠে নামাতে পারেননি তিনি। বরং আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশার পক্ষে।রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এমপি ফজলে হোসেন বাদশা গত ১৫ বছরে মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে যে বৈরিতা সৃষ্টি করে চলেছেন, এবার তার প্রতিফলন দেখাবে মহানগর আওয়ামী লীগ। এবার কোনোভাবেই বাদশাকে ছাড় দিতে রাজি নন তাঁরা। যে কারণে প্রচারণা শুরু হওয়ার পরে নৌকার প্রার্থী বাদশা হলেও তাঁর পক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের কেউ মাঠে নামেননি। এরই মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশার হয়ে মাঠে নেমেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামলাসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্র বলছে, মহাজোটের প্রার্থী হয়ে ফজলে হোসেন বাদশা গত তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রতিবারই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। এমনকি মানববন্ধন থেকে প্রকাশ্যে লিটন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। এসব কারণে ক্ষুব্ধ মেয়র লিটন। এর বাইরে জেলার একাধিক এমপি এবং মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও বিভিন্ন সময়ে দ্বন্দ্বে জড়ান।এটিই তাঁর জন্য এবার সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এমপি বাদশা তিনবার এমপি হয়ে তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কোনো উপকারে আসেননি। উল্টো তাঁর প্রাপ্ত সরকারি বরাদ্দগুলো তিনি নিজ সংগঠনসহ বিভিন্ন ভূঁইফোড় সংগঠনের নামে বরাদ্দ দিয়ে অর্থ তছরুপ করেছেন। গত পাঁচ বছরে এমপি বাদশা টিআর-কাবিখা প্রকল্প থেকে যেসব বরাদ্দ দিয়েছেন, সেগুলোর অধিকাংশরই কোনো হদিস নেই। ফলে এ নিয়ে বিরক্ত মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘রাজশাহী সদর আসনে দলের নেতাকর্মীরা আর অন্য কাউকে চাই না। গত ১৫ বছরে রাজশাহী সদর আসনে নৌকা প্রতীক অন্য দলের হাতে তুলে দেওয়ায় এখানে আওয়ামী লীগের অনেক ক্ষতি হয়েছে। যিনি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন, তিনি পরবর্তীতে ভুলে গিয়েছিলেন যে তিনি আওয়ামী লীগের শরিক দলের এমপি। সে কারণে এখানে আওয়ামী লীগের ক্ষতি ছাড়া লাভ হয়নি। কাজেই এবার মহানগর আওয়ামী লীগ তাঁকে আর কোনো ধরনের ছাড় দিতে চাই না। আমরা কাজ করছি, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশার হয়ে। তাকেই নির্বাচিত করতে চাই।’

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, ‘এমপি বাদশাকে গত তিন বার মনোনয়ন দেওয়ায় রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের বড় ক্ষতি হয়েছে। এবার আমরা আশা করেছিলাম, দলের নেতাদের মধ্যেই নৌকা থাকবে। দলের মহানগর সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামালকে প্রথমে নৌকা প্রতীক দেওয়া হলে পরবর্তিতে সেটি বাতিল করে ফজলে হোসেন বাদশার হাতে আবারও নৌকা তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের যেহেতু তিনি কখনো মূল্যায়ন করেননি, সেহেতু তাঁর হয়ে কাজ করার প্রশ্নই আসে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনকি সম্পাদক পদের আরেক নেতা বলেন, ‘হাতুড়ি প্রতীক ফেলে ফজলে হোসেন বাদশা এবারো নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি তাঁর মতো নির্বাচন করুক, আমরা আমাদের মতো নির্বাচন করব। আমরা তাঁকে বাধা দিতে চাই না। কিন্তু তাঁর হয়ে মাঠে নামতে পারব না। আমরা আমাদের দলের প্রার্থীর হয়ে কাজ করব।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘রাজনীতি করতে গেলে মতবিরোধ থাকবেই। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার পক্ষে মাঠে নামবেন বলে বিশ্বাস রাখি। আপাতত আমি আমার মতো করে এগিয়ে যাচ্ছি।’

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।