বদরুদ্দোজা প্রধান পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
মঙ্গলবারের (২৫ ডিসেম্বর)। পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের শিংরোড খুনিয়া পাড়াএলাকার। ওই এলাকার দারুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা এই মাহফিল আয়োজন করে। মাহফিলে আসবেন আলোচিত ভাইরাল বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী, তাই পঞ্চগড়ে মাসজুড়ে ছিল তুমুল প্রচারণা।।ঐ এলাকার হাফেজ মুফতি মিজানুর রহমানের মাধ্যমে মাদানীর সাথে যোগাযোগ করেন তারা। অগ্রিম ২০হাজার টাকাও পাঠানো হয়। যথারীতি ২৫ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) শিংরোড খুনিয়া পাড়া দারুল কুরআন হাফেজিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে মাহফিল শুরু হলে পঞ্চগড় জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ধর্মপ্রাণ লোকজন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীর বক্তব্য শোনার জন্য মাদরাসা মাঠে হাজির হন। রাত ১১টা পর্যন্ত অন্যান্য আলোচকরা আলোচনা করেন, কিন্তু তখনও ভাইরাল বক্তা মাওলানা মাদানী উপস্থিত না হলে ক্ষুব্ধ হন শ্রোতারা। এক পর্যায়ে আয়োজকরা জানান, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারবেন না। তিনি অনুষ্ঠানে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। বিষটি এলাকার তোলপাড় শুরু হলে তোপের মুখে পড়েন রফিকুল ইসলাম মাদানীর সাথে যোগাযোগ করা হাফেজ মুফতি মিজানুর রহমান। বিষটি নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় তিনি বলেন, আমি নিজে গিয়ে রফিকুল ইসলাম মাদানী সাথে আলাপ করেছি। এবং তার পিএস এর দেয়া ০১৮৭৫৮৭০৩৭৭ বিকাশ নাম্বারে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। তার পিএস আমাকে নিশ্চিত করেন। মঙ্গলবার ২৫ ডিসেম্বর রফিকুল ইসলাম মাদানী আপনাদের ওয়াজ মাহফিলে যাবেন। কিন্তু মাহফিলের দিন ওই পিএস জানায় তারা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। পরে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ২৬ ডিসেম্বর মাদরাসাটির সভাপতি আব্বাস আলী, মুহতামিম মিজানুর রহমান, পরিচালক আলতাফর হোসেন এবং মাহফিলের সভাপতি নুর হাবিবকে অভিযুক্ত করে পঞ্চগড় জজ কোর্টের আইনজীবী মেহেদী হাসান মিলনের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন ইকবাল বাহার নামে পঞ্চগড়ের এক সংবাদকর্মী। সংবাদকর্মী ইকবাল বাহার বলেন, রফিকুল ইসলাম মাদানী আলোচনা করবেন শুনে শীত উপেক্ষা করে ২৫ কিলোমিটার দূর থেকে গিয়েছিলাম। কিন্তু গিয়ে শুধু আমি প্রতারিত হইনি, উপস্থিত হওয়া সব মুসল্লিরা প্রতারিত হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জেনেছি মাহফিলের আয়োজকরা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে তাদের মাহফিলে দাওয়াতই করেননি। তার নাম ব্যবহার করে যে আয়োজন করা হয়েছে তা বক্তা জানেনও না। সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টিও সম্পূর্ণ সাজানো। মাহফিলের আয়োজকদের মিথ্যা প্রচারণায় সেখানে গিয়ে আমরা প্রতারিত হয়েছি। ধর্মীয় বিষয়ে এমন প্রতারণা ভবিষ্যতে যেন কেউ না করতে পারে, এজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। আইনজীবী মেহেদী হাসান মিলন বলেন, মাহফিল কমিটি অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গসহ প্রতারণা করেছে। তারা কেন এমনটা করলো—লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে এর সদুত্তর আগামী তিন দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। পঞ্চগড়ের এই ঘটনা উল্লেখ করে সত্যের সন্ধানে নামের একটি আইডি ফেসবুকে পোষ্ট করেছেন । এই পোষ্টের কমেন্ট করে রফিকুল ইসলাম মাদানী বলেছেন, এটা শুধু পঞ্চগড়ে নয়। বিভিন্ন যায়গায় প্রতারকদের কাছ থেকে মাহফিল নিয়ে মানুষ ধোকা খাচ্ছে। কয়জনের ব্যাপারে কথা বলবো ভাই। আমার সাক্ষাত ছাড়া প্রোগ্রাম নেইনা। এটা সারা দেশ জানে। তারপরও যে ধোকা খায় এটা তার দায়িত্ব। এ বিষয় জানার জন্য রফিকুল ইসলাম মাদানীর পিএস পরিচয় দেয়া ০১৬০৫৬৩৮০৩৪ মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।