এম এ মান্নান,মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর সহ সবকটি উপজেলার হাওর অঞ্চলের মানুষের বৈশাখের ধান কাটা আর রমজানের রোজার ১৫ হইতে রোদের তাপমাত্রা বেড়ে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্তও প্রভাব ফেলেছে, অসহ্য গরমে বৈশাখের সোনালী ফসল বোরোধান প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছাড়াই, ধান কাটার মহা উৎসব শুরু হয়েছে । এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় , অতি ঘন বৃষ্টি না হওয়ায় পাহাড়ি ঢল এবং জোয়ারের পানি কোনটাই দেখা মেলেনি এখনো,বর্তমান সময়ে নদীতে পানি আছে একেবারে তলদেশে, এতে হাওর রক্ষা বাঁধের নেই কোন ঝুঁকি, প্রকল্প পি আই সি নিয়ে নেই কোন আলোচনা সমালোচনা। কৃষকদের বাঁধ নির্মাণ কাজ নিয়ে আন্দোলনের নেই কোন আলামত , হাওর জুড়ে চলছে সোনালি ধানের বাহার, মাঠে মাঠে কৃষাণ কৃষাণী ধান সিদ্ধ ও শুকানো নিয়ে একেবারেই ব্যস্ত সময় পার করছে। আর কৃষকের কষ্টের ফসল, গোলায় তুলতে কৃষকের কি যে আনন্দ তা একমাত্র কৃষকেই জানে। পাকা ধানের শীষ দুলছে বৈশাখী বাতাসে। ধানের ম ম ঘ্রাণে খুশির ঝিলিক কৃষকের চোখে-মুখে। হাওর অঞ্চলের প্রতিটা গ্রামে গ্রামে ধান কাটতে কৃষকরা এখন পার করছে ব্যস্ত সময় ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র থেকে যায়যায়দিনকে জানায়, গত বছরগুলোতে বোরো মৌসুমে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছিল। যার ফলে কৃষক অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হতো, রোদের অভাবে বিনষ্ট হয়ছে অনেক ধান। এবছর দেখা গেছে বীজতলা থেকে শুরু করে এখনো তেমন কোনো অতিরিক্ত বৃষ্টির দেখা মেলেনি। পুরো মৌসুমই সেচের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়েছে। তারপরও ধানের ফলন ভালো হয়েছে, ২৮ ব্রি ধান ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ক্ষতি হয়েছে। নতুন জাতের ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
মধ্যনগর উপজেলার জমশেরপুর গ্রামের কৃষক চন্দন তালুকদার বলেন, ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধানের ফলন ভালো হয়েছে, আমি ৪ কিয়ার জমিতে ২৮ ব্রি ধান আবাদ করেছিলাম পুরোটাই ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে শেষ, আরও ৬ কিয়ার জমিতে একটি নতুন জাতের ধান লাগিয়েছি। ফলন ভালো হয়েছে, তবে রোগবালাই, পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে জৈনকরাজ ধান চাষ করেছি। ধানটি খুব পুষ্ট হয়েছে, দেড় বিঘা জমিতে ধান লাগাতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে ধানের মণ ১ হাজার ৫০ টাকা। এবার ৪০ মণ ধান পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।
গলহা গ্রামের কৃষক মোঃ খাইরুল বিশ্বাস বলেন, আমি কৃষির কাজের পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। এখন ধান কাটার মৌসুমে ধান কাটছি। আশপাশের অনেক মাঠের ধান বৈশাখের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কাটা হবে। জৈনকরাজ ধানটি খুবই সুন্দর। ভালো ফলন হয়েছে, প্রতি কিয়ারে ২০ থেকে ২৫ মন ধানের আশাকরছি।