মুন্সীগঞ্জে খুব শীঘ্রই জেলা যুবলীগের সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর এ সম্মেলন কে ঘিরে পদ পদবী প্রাপ্তিতে জেলার নেতাদেরকে দৌড়ঝাপ করতে দেখা যাচ্ছে।
অনেকে আবার সভাপতি হিসেবে পেতে চাই এমন ধরণের আবদার নিয়ে গণযোগাযোগ মাধ্যমে সেইসব ব্যক্তিদের ছবিসহ প্রচার ও প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে কে যে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন তা এ মুহূর্তে বলা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রার্থী বেশি থাকার কারণে। আসন্ন জেলা যুবলীগের সম্মেলন ছাড়া এ বিষয়টি এখনই পরিস্কার হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে অনেকে নেতারা মনে করছেন।
তবে এ সম্মেলনে দীর্ঘ বছর পর জেলায় যুবলীগের নতুন মুখের নেতৃত্বে আসছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের কেউ কেউ। এমনটি খবর পাওয়া যাচ্ছে এখন সর্বত্র। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্র নেতারাই এ পদের জন্য সবচেয়ে বেশি আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন।
এ সম্মেলনে নতুন মুখের প্রার্থীদের মধ্যে থেকে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা আসবে নিয়ম ও প্রথা অনুযায়ী। তাই এই নিয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থীদের মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে জেলার শহরে।
তবে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন তা নিয়ে জেলা শহরে গুঞ্জনের বাতাস বর্তমানে ভারী হয়ে উঠেছে। তবে এবার প্রথমবারের মতো এ দু’টি পদে প্রার্থীর সংখ্যা অনেকটাই বেশি। আগে এমনটা ছিল না। অতি সম্প্রতি জেলা যুবলীগের সম্মেলনকে ঘিরে কেন্দ্রীয় যুবলীগ ঐ দু’টি পদে আসতে চাওয়া প্রার্থীদের রাজনৈতিক জীবন বৃত্তান্ত আহবান করেন।
কেন্দ্রীয় নেতাদের এ ধরণের ডাকে সারা দিয়ে জেলা যুবলীগের ঐ দুটি পদের জন্য অনেক যুব নেতা প্রার্থী হিসেবে তাদের রাজনৈতিক জীবনের আমলনামা ইতোমধ্যে কেন্দ্রে জমা প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে। তাতে সভাপতি পদে ৭জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৯জন যুব নেতা জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন কেন্দ্রে। এ বিষয়টি একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে ১৯জনের জীবন বৃত্তান্ত প্রদানের বিষয়টি অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেছেন। এর আগে এতো পরিমাণ এ পদের জন্য এ জেলা থেকে এমনভাবে প্রদানের ঘটনা ঘটেনি। যারা সভাপিত পদের জন্য জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন তারা হচ্ছেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিএম মনসুর উদ্দিন। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট গোলাম মাওলা তপন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ আসাদুজ্জামান সুমন। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিস উজ জামান আনিসের ছোট পুত্র হাজী জালাল উদ্দিন রুমী রাজন। গজারিয়া উপজেলার হোসেনদি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল হক মিঠু। শ্রীনগর উপজেলা থেকেও জেলা যুবলীগের সভাপতি পদের জন্য একজন প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে এখানে এ পদের জন্য ৭জন প্রার্থী জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। তবে এবার জেলা যুবলীগের এ পদে লড়াইয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ৩জন এ পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন। আগে এ জেলায় এমন ঘটনা কখনো ঘটে নি।
এদিকে মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন ও জিএম মনসুর উদ্দিন এ দু’টি জুটি ৯০’এর স্বৈরাচার আন্দোলনে মুন্সীগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি ভুমিকা পালন করেন। তবে তাদের সাথে সহযোদ্ধা হিসেবে সেই সময়ে ছাত্রলীগের অনেকে নেতাই ছিলেন। তারা পর্যায়ক্রমে জেলায় ছাত্রলীগেরে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় এখানে প্রার্থী বাছাইয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা হবে। এ পদের জন্য যারা এখানে প্রার্থী হয়েছেন তারা সকলেই বিগত দিনে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে যোগ্য নেতা হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। তাদের রাজনৈতিক জীবনের আমলানামাও পরিচ্ছন্ন বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা যুবলীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে যাকে যোগ্য মনে করবেন তার নামই সেদিন ঘোষণা করা হবে। সেদিন সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থীরা সেই ঘোষণা মেনে নিবেন বলে অনেক প্রার্থী অভিমত প্রকাশ করেছেন।
রাজনৈতিক বিবেচনায় জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদরের উপজেলাটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই হিসেবে জেলা যুবলীগের সভাপতি পদটি মুন্সীগঞ্জ সদরের দিকে ঝুঁকে রয়েছে বলে জানা গেছে। তাই এখান থেকে এবার জেলা যুবলীগের সভাপতি পদটি পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বিগত দিনে এমনটিই দেখা গেছে। তার পরের সাধারণ সম্পাদক পদটি জেলার অন্য উপজেলা থেকে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে এমনভাবেই জেলার পদ পদবি বিন্যাস করা হয়ে থাকে।