মো. নাজির হোসেন, মুন্সিগঞ্জঃ
মুন্সীগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পৌর মেয়রের সমর্থক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হওয়ার দাবি করেছে পক্ষ দু’টির সমর্থকরা। শুক্রবার ৫ টার দিকে বিকেলে শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় সংর্ষের ঘটনা ঘটে।
পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবের অভিযোগ স্থানীয় সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস এর নির্দেশে তার সমর্থকরা এ হামলা করেছে। তবে অভিযোগের বিষয়টি অসত্য দাবি সংসদ সদস্য।
আহতরা হলেন, মুন্সীগঞ্জ পৌর মেয়র ফয়সাল বিপ্লব পক্ষের আব্দুল মালেক (৫০), মো. জামাল (৩৫), ফয়সাল সোহাগ (৩৮), রাসেল (২৬),সাদ্দাম (৩০), আফসার হোসেন (৫০), সুমন (৩৫),আবুল কালাম, সালাউদ্দিন। তারা সবাই জেলার গজারিয়া উপজেলার বাসিন্দা। সংসদ সদস্য পক্ষের আহত হলেন পৌর ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মকবুল হোসেনের ভাই মনির হোসেন (৪৮)।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে শহরের প্রধান সড়কে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুন্সীগঞ্জ। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গজারিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ জিন্নাহর নেতৃত্বে বিকেলে ১০-১৫ টি ট্রলারে করে আসেন মেয়রের সমর্থকরা।
সমর্থকরা ট্রলার থেকে নেমে পৌরসভার কাউন্সিলর মকবুল হোসেনের এলাকা দিয়ে মিছিল করে অনুষ্ঠান স্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। মকবুল হোসেন মৃণাল কান্তির ডান হাত হিসেবে পরিচিত। সে সময় কাউন্সিলর মকবুল হোসেনের ভাই মনির হোসেন লোকজন নিয়ে মিছিলে বাঁধা দেয়। সে সময় দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। এতে মনির হোসেন সহ ৮-১০ জন আহত হয়।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এম ফেরদৌস বলেন, ৭ জন আহত অবস্থায় জেনারেল হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে, হামলা পর পৌর মেয়রের সভায় আসা নেতা-কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পরেন।
পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠান করছি। সে অনুষ্ঠানে আসা নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে সংসদ সদস্য মৃণালের লোকজন। আমরা পুলিশ সুপারের কাছে এর বিচার চাই। এর বিচার না হলে, উচিৎ জবাব দেয়া হবে।
গজারিয়া উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা বলেন, আমাদের উপর হামলা, আমরা মেনে নেব না, মৃণাল কান্তি দাস গজারিয়া উপজেলা কিভাবে যায় তা আমরা দেখে নিবো।
মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, তিনি একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গজারিয়ায় ছিলেন। হামলা, মারামারির বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে ঘটনার পেছনে কারা আছেন সেটি খুঁজে বের করার অনুরোধ করেন তিনি।
সদর থানার (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, পৌর মেয়রের সমাবেশকে কেন্দ্র করে গজারিয়া উপজেলা থেকে ট্রলারে করে আ.লীগের নেতাকর্মীরা আসছিলেন। তারা হাটলক্ষীগঞ্জ ঘাটে এসে নামতে চাইলে, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মকবুল হোসেনের লোকজন বাধা দেয়। এতে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হাতাহাতি শুরু হয়।
এ সময় কাউন্সিলরের এক ভাই এবং গজারিয়া থেকে আসা ৪-৫ আহত হওয়ার খবর শুনেছি। ঘটনার পর থেকে হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।