মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য কাজী ফুলনের বিরুদ্ধে ছোট ভাইয়ের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, ওই ইউপি সদস্য তার সৌদি আরব প্রবাসী ছোট ভাই কাজী ইউসুফ হাসানের দখলকৃত জমিতে বড় ভাই কাজী ওমর ফারুক ও চতুর্থ ভাই কাজী দিদার শরীফকে দিয়ে শনিবার রাত থেকে দোকান নির্মান করছেন।
এছাড়াও ইউসুফ হাসানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে। এতে ভুক্তভোগী কাজী ইউসুফ গত ২৩\০৯\২০২২
রোববার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ কাজী কসবা মৌজার আর.এস খতিয়ান ৮৯.৯০.৮৬, আর.এস দাগ ১১০৯, ১১১০ মোট ৪১ শতাংশ সম্পত্তির পুকুরের দক্ষিণ পূর্ব কোণে ৫.১২ শতাংশ জমি রয়েছে তার। কিছু অংশে বালু ভরাট করিয়া রেখেছিলেন। এতে তার তিন ভাই তার দখলী জমিতে নতুন করে বালু ভরাট করে বেদখলের চেষ্টা করে। তখন তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা করলে। আদালত শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আদেশ প্রদান করে।
সরেজমিন গত রোববার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, রামপাল ইউনিয়নের কাজী বাড়িতে পুকুরের সামনের অংশে বিরোধপূর্ণ জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। বালু ফেলা চলমান রয়েছে। উপরের অংশ ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করছেন শ্রমিকরা। আর এ কাজ তদারকি করছেন ছোট ভাই কাজী দিদার শরীফ।
কাজী ইউসুফ হাসান বলেন, আমি ১৬ বছর সৌদি আরবে প্রবাসে রয়েছি। এই জায়গায় আমার টিনের বেড়া দেওয়া ছিলো। চাচাদের কাছ থেকে ক্রয় ও পৈত্রিক ৫ শতাংশ ১২ পয়েন্ট জমি এ অংশে আমার দখল ছিল। তা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনেও রয়েছে। আমার বড় ভাই ফুলন মেম্বার তার জমিতে বাউন্ডারী দেয়াল দেন। দুই ভাইয়ের কাছে তার থেকে তিন শতাংশ জমি বিক্রি করছে। তাদের দখল দেওয়ার কথা তার অংশের জমি হতে। কিন্তু তা না করে আমার দখলীয় জমিতে জোর করে রাতের আঁধারে দোকান ঘর নির্মাণ করছে। তিনি আরও বলেন, গেলো শুক্রবার আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কাজী ফাইভার (প্রা:) লিমিটেডে তার ছেলেরা সহ ১০-১২ জন হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ সময় আমার কর্মচারীদের বেধড়ক পেটায়। জসিম নামে একজন কর্মচারী হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এতে আমার কয়েক লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কাজী ফাইবারের কর্মচারী আল-আমিন বলেন, দুই শুক্রবার ওরা এখানে হামলা চালায়। এতে ভাংচুর সহ আমাদের মারধর করেছে। তারা এখনো লোকজন দিয়ে আমাদের চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, ফুলন মেম্বার তার জমি থেকে ৩ শতাংশ জমি বিক্রি করেছে দুই ভায়ের কাছে। এখন মেম্বার তার অংশ থেকে দুই ভাইকে না দিয়ে ইউসুফের অংশে দখল করে দিচ্ছেন। ২০ থেকে ২৫ দিন আগে মাপামাপির সময় আমিও উপস্থিত ছিলাম। মেম্বার এখন তা মানছেন না।
অভিযুক্ত কাজী দিদার শরীফ বলেন, এখানে আমাদের পূর্ব -পশ্চিমে ৬৩ ফুট জমি রয়েছে। ইউসুফে ২১ ফুট রেখে আমরা দুইভাই ৪২ ফুট জায়গায় দোকান করছি। বড় ভাইয়ের অংশের পাশে তার জমি রয়েছে।
অভিযুক্ত রামপাল ইউপি ৮নং সদস্য কাজী ফুলন বলেন, ওই জায়গাটি আমার নয়। আমাদের চাচাতো ভাইয়ের। আমার বড় ও ছোট দুই ভাই দোকান নির্মাণ করছেন। আমি ও ইউসুফ দুইজন এক সময় পুকুরের দক্ষিণ অংশ দুই ভাগে নিয়েছিলাম। এখন ওর অংশ রাখা হয়েছে। সব অংশতো আর ও পাবে না। আদালতের আদেশ অমান্য করছেন এ বিষয় বলেন, আমি অমান্য করছি না দুইভাই দোকান নির্মাণ করছেন। তবে তিনি এ অংশে ইউসুফ ১০০ গাড়িত মতো বালু ভরাট করেছেন বলে তিনি জানান। পারলে আপনারা মিমাংসা করে দেন বলেও জানান তিনি।
হাতিমারা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের কর্মকর্তা ওমর চন্দ্র দাস জানান, জায়গাটির মধ্যে কোন কিছু না করার জন্য আদালতের নির্দেশনা ছিল। আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে একটি পক্ষ সেখানে দোকান বানানোর পাঁয়তারা করছে। যারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আদালত যদি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়, সে ক্ষেত্রে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।