আরিফুল ইসলাম রিয়াজ, মোল্লাহাট, বাগেরহাটঃ
কয়েক দফায় অত্যাচার নির্যাতন করে তিন লাখ টাকা আদায়ের পর আরো যৌতুক দাবিতে স্বামী ও শাশুড়ি কর্তৃক এক গৃহবধূকে সীমাহীন নির্যাতন ও পরিধেয় কাপড় ছিঁড়ে অর্ধ উলঙ্গ করে প্রকাশ্য সড়কে ফেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন বর্বরোচিত নির্যাতনে গুরুতর জখমী ওই গৃহবধূ। গত বুধবার সকাল ৭টায় ফকিরহাট উপজেলার সোনাখালী রাজপাট এলাকায় শশুর বাড়িতে স্বামী রুবেল হাজরা ও শাশুড়ি রহিমা কর্তৃক এহেন নির্যাতনের শিকার হন গৃহবধূ পারভীন (২৫)। পারভীন মোল্লাহাট উপজেলার ঘাটবিলা গ্রামের মান্নান চৌধুরীর মেয়ে।
চিকিৎসাধীন গৃহবধূর বাবা ও মা জানান, ফকিরহাট উপজেলার সোনাখালী রাজপাট এলাকার রুবেল হাজরা (৩২)’র সাথে প্রায় ৭বছর পূর্বে তাদের মেয়ে পারভীনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন অজুহাতে যৌতুক দাবি করে মেয়ের স্বামী ও শাশুড়ি।
মেয়ের সুখের আশায় বিভিন্ন সময়ে ২ লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। এরপরও নির্যাতন এমনকি তাদের মেয়েকে তালাক দেয় রুবেল। এসব ঘটনায় দুবার মামলা এবং আপোষ হয়। দ্বিতীয়বারে আর কোন নির্যাতন না করার শর্তে আদালতের মাধ্যমে আবার তাদের বিবাহ হয়। এরপর প্রায় একবছর আগে ইজিবাইক কেনার কথা বলে আবার টাকা চায় পারভীনের স্বামী ও শাশুড়ি। একপর্যায়ে অনেক কষ্টে এক লাখ টাকা দেন লোভী জামাইকে। এরপর কিছুদিন ভালো ব্যবহার করলেও আবার এক লাখ টাকা দাবি করে তারা। পারভীন তার গরীব বাবা মা’র কাছে আর কোন টাকা চাইতে অপারগতা প্রকাশ করলে ঘটনার সময় চুল ধরে টেনে হিছড়ে স্বামী ও শাশুড়ি মিলে কিলঘুষি ও লাথি-উষ্ঠা মারতে মারতে ঘরের বাহিরে নেয়। এরপর রাস্তায় ফেলে কচা দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম (মৃতপ্রায়) অবস্থায় ফেলে রাখে। এছাড়া তার পরিধেয় কাপড় (স্যালোয়ার-কামিজ) ছিঁড়ে অর্ধ উলঙ্গ করে। এক পর্যায়ে কোন রকম হামাগুড়ি দিয়ে নিকটস্থ ইউপি সদস্য’র বাড়িতে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পান গৃহবধূ। এরপর তাকে উদ্ধার করে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এখনও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এহেন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ভিকটিমের বাবা মা। মেয়ের অবস্থার একটু উন্নতি হলেই মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান তারা।
রুবেল হাজরা মুঠোফোনে বলেন, তার ঘরের থেকে তিন হাজার টাকা খুজে না পেয়ে ওর (বিউটি) কাছে চাইলে সে জানেনা বলে ঘর থেকে বের হয়ে দৌড়ে রাস্তায় যায়। তখন তারে পিছন থেকে ডাকলে সে বলে তার বাবা যে টাকা দিছে তা ফেরত দিতে। এরপর রাস্তায় একটু জড়াজড়ি হইছে। তেমন কিছু হয়নাই বলেও উল্লেখ করেন রুবেল।