আরিফুল ইসলাম, লালমনিরহাটঃ
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী,কালিগঞ্জ,পাটগ্রাম ও লালমনিরহাট সদরে বানিজ্যিক ভিক্তিতে সূর্যমূখি চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। গ্রাম গুলোতে ফুল চাষের সফলতা দেখে পুরো জেলায় সূর্যমূখি চাষের ব্যাপক সাড়া পড়েছে।পুরো জেলায় ৮০হেক্টর জমিতে সূর্যমূখি ফুলের বানিজ্যিক চাষ হয়েছে।
উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের কুমরির হাটে কৃষক সোলাইমান হোসেন জানায় তিনি আগে তামাক চাষ করতো তামাকের তুলনায় সূর্যমুখি চাষে অধিক লাভবান হয়েছেন। সফলতার সাথে ২বছর যাবৎ সূর্যমুখীর বাণিজ্যিক চাষ করে আসছেন।গতো বছর ১বিঘা জমিতে ৯ মন বীজ উৎপাদন করেছেন,প্রতি মন ৪হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছেন।এবার ও এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন।
সোলাইমান এর সফলতা দেখে আদিতমারী উপজেলার শতাধিক কৃষক সূর্যমুখি চাষে আগ্রহ পোষন করেছেন।ঐ ইউনিয়নে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক হারে সাড়া পড়েছে।
কৃষক সোলাইমান আরো জানায় তামাকের পরিবর্তে তিনি সূর্যমুখী চাষ করছেন। সূর্যমুখী চাষে খরচ কম এবং ফলন ভালো, বাজারে এর চাহিদা প্রচুর।এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ফরচ হয়েছে ৬-৭হাজার টাকা। সূর্যমুখির বীজ বিক্রি করে ১৫-১৮হাজার টাকা লাভ হয়। এ বছর বিঘায় খরচ হয়েছে ৬হাজার টাকা। ফলন ও ভালো হয়েছে। প্রায় ১৮-২০হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশাবাদী। বাজারে এর চাহিদা ও লাভ অনেক বেশি।গতো বছর লাভবান হয়েছেন এবং এ বছরেও ভালো মুনাফা অর্জন করবেন বলে আশাবাদী।সরকারের সহযোগিতা পেলে সামনে আরো বড় পরিসরে সূর্যমুখীর বাণিজ্যিক চাষ করবেন বলে ইচ্ছা পোষণ করেন
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য সূত্রে জানা যায় লালমনিরহাটে নতুন নতুন লাভজনক ফসল চাষে কৃষকদের প্রেরণা জোগাতে মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে এবং চরের বালুতে কিভাবে ফসল ফলানো যায় সে বিষয়ে প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে।এবছর লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে।সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উৎসাহ, পরামর্শ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।আগামীতে লালমনিরহাটে সূর্যমুখী চাষ দ্বিগুণ হবে এবং বদলে যাবে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকা। এছাড়া মাঠ পর্যায় ২ফসলি জমিতে কিভাবে বছরে ৩টি অর্থকারী কৃষিশষ্য চাষ করা যায় তা নিয়ে নানা পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
পুরো জেলায় সূর্যমুখি চাষে সফলতাও এসেছে। অর্থকারী ফসল আবাদের অংশ হিসেবে আদিতমারী কালীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক হারে সূর্যমুখী ফুলের বাণিজ্যিক চাষ করা হয়েছে। জানা যায় মূলত প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সূর্যমুখি চাষ হচ্ছে।সূর্যমূখী ফুলের দানা থেকে ভোজ্যতৈল উৎপাদন করা হয়।প্রতি মন দানায় ২২-২৫কেজি তেল উৎপাদন হয়।এবং এর দানা সরিষে বাটার মতো করে তরকারিতে খাওয়া যায়। এছাড়াও প্রতিদিন ফুলের ক্ষেতের সৌন্দর্য দেখতে মানুষ ছুটে আসে দূর দুরান্ত থেকে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরিয়ে রাখে পুরো গ্রাম।পুরো জেলায় সূর্যমুখি চাষের ব্যাপক হারে সাড়া পড়েছে। এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী ফুল চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও বেশ ভালো হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।আগামী বছর এর পরিমাণ দ্বিগুন হবে বলে ধারনা করা হয়।