[স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ]
লেখক, কবি ও সাহিত্যিক রফিকুল ইসলাম ভুলু
আপনারা কে কি বলেন, সেজন্য আমি মনে কিছু করি না। জন্মসূত্রে জাতিগত ভাবে আমি বাঙালী এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আমি বাংলাদেশী। বাংলা আমার ভাষা, আমি বাংলায় কথা বলি। কেউ বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ, কেউ বলেন স্মার্ট বাংলাদেশ। আমি বলি স্বপ্নের সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
দুইশতো বছর ব্রিটিশ শাসন। তেইশ বছর পাকিস্তানী শাসন ও শোষন। অবশেষে ১৯৭১-এ ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দু`লক্ষাধিক মা-বোনের মহান ত্যাগ এবং একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশের জন্ম।
সেই স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনে বিভিন্ন নেতৃত্বের মাঝে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন, আমাদের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সদ্য স্বাধীন দেশে, ভাংগা-গড়ার কাজে নিয়োজিত জাতি অর্ধাহারে- অনাহরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন স্বপ্নের দেশকে গড়ার লক্ষ্যে। একদিকে ছিলো খাদ্য সংকট অন্যদিকে আমেরিকার সৃষ্ট দূর্ভিক্ষের কারণে জীবন- মরণ লড়াই।
এরই মাঝে ৭৫-এর ১৫ই আগষ্টে স্ব-পরিবারে হত্যা করা হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যা ছিলো খুবই মর্মান্তিক এবং বেদনাদায়ক।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে শুরু হলো বিপরীত মূখি কার্যক্রম। স্বাধীনতার চেতনায় দেশ গড়ায় এলো চরম আঘাত। সুযোগে সদব্যবহার করলো ঘাপটি মেরে থাকা শয়তানের দল। যা আজও অব্যাহত রয়েছে।
বিশেষ করে, সেদিন যারা দেশের শত্রু হিসেবে ধ্বংসাক্তক কার্যক্রমে লিপ্ত ছিলো,আজ তাদের অনেকেই বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। কিন্তু তাদের ধারার পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
এরথেকে পরিত্রাণ পেতে হলে,অবশ্যই আদর্শবাদী হতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিটি সৈনিকের, বিতাড়িত করতে হবে সকল হাইব্রিড ও দূর্নীতিবাজ এবং ক্ষমতা লোভী শয়তান ও মুনাফেকদেরকে।
দেশে উন্নয়নের যে কাজ চলছে তা`কল্পনাতীত। কর্মসংস্থানও রয়েছে, টাকার সমস্যও নেই। খাদ্যদ্রব্য এবং বিভিন্ন জিনিষপত্রও রয়েছে প্রচুর পরিমানে।
কিন্তু কেনো যেনো একটা কৃত্রিম হাহাকার শুনা যায় কিছু মানুষের মুখে। তবে একটা কথা বলে রাখি। কাজ তারাই পায় না এবং করে না, যারা অলস এবং বড়ো-বড়ো কথা বলে, কিন্তু কোনো কাজ করতে চায় না এবং আরেক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা নিজেদেরকে খুব শিক্ষিত এবং উঁচ্চ বংশের ভেবে নিচু বা ছোট ধরণের কাজ করাকে ঘৃণার চোখে দেখেন। এই দুই ধরণের পোড়া কপাইল্লাদের স্থান কোথাও নেই। এদের নিয়ে ভাবার প্রয়োজনও নেই। এরা দেশ ও জাতি এবং ঘর-সংসারের জন্য বোঝা স্বরুপ।
এরপর দেশে ধর্ম প্রচারক অনেক কিন্তু সত্যবাদিতার খুবই অভাব এবং মেধাশুন্য রাজনীতি ও একে-অপরকে ভীত্তিহীন দোষারুপ করা, অবৈধ অর্থশালীরা ধর্মালয়ে অনুদানে জান্নাতের আশায় বিভোর, এরা দেশ ও জাতির উপকারার্থে গরীবের জন্য বিনা চিকিৎসায় কোনো হাসপাতাল কিংবা কল-কারখানা করে দেয়ার অনুদান প্রদান করেন কিনা জানিনা,
এরপর ব্যবসায়ীদের চক্রাকারে মুনাফা, প্রতি দোকানে প্রত্যেক জায়গায়, প্রতিদিন একই জিনিস বিভিন্ন দামে বিক্রি করা, সকল কিছুই নিয়ন্ত্রন বিহীন, সব কিছুই তাদের ইচ্ছা মাফিক চলে, কেউ সত্য বলা কিংবা সততা মাফিক জীবন ধারণের স্বপ্ন দেখা মানে বোকার স্বর্গে বাস করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা বলা মানে, নিজেকে অপরাধী ভাবা,
আমরা আল্লাহকে স্বীকার করি কিন্তু আল্লাহর নির্দেশনা মানা বা পালন করার চেষ্টা করি না। আবার দান খয়রাত করে জান্নাতের সার্টিফিকেট নিতেও ভুলি না, এযেনো নিরেট মূর্খতারই পরিচয় বহন করার সামিল।
এদেশে আল্লাহ, রসূল, পীর,মুর্শিদ, ফকির, সাধু-সন্যাসী, হুজুর, মস্তান, মাজার ও আউলিয়া এবং শিয়া- সুন্নি, কাদিয়ানী ও ওহাবী নানান তরিকতের ভিতরেই চক্রাকারে ঘুরে বেড়ায়।
এরপর ধর্মীয় আচার-আচরণ ও আনুষ্ঠানাদি অনেক ক্ষেত্রে মিশ্র প্রক্রীয়া চলে। সর্বশেষ জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য- সংস্কৃতি এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি সহ সকল কিছুর মধ্যেই যেনো ধর্মীয় একটা মিশ্র প্রক্রীয়া কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। এটার কারণ হচ্ছে, জ্ঞানহীনতা এবং সুশিক্ষার অভাব।
আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত করুন, আমীন।
লেখক,,
জনাব,, রফিকুল ইসলাম ভুলুর