মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ভাগ্যকুলে পদ্মার চরে এখন দিগন্ত ছুঁয়ে মাঠ জুড়ে হলুদের সমারোহ। মাঠের দিকে তাকালে হলুদের সমারহ আর সরিষার ফুলের মৌমৌ গন্ধে যেন চোখ ফেরাতেই মন চায় না। দৃষ্টিনন্দন সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠের পর মাঠ। সরিষা গাছে হলুদ রঙের সরিষা ফুলে যেন বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। শ্রীনগর উপজেলার মাঠগুলোতে এমনটাই নয়নাভিরাম দৃশ্য এখন সকলের নজর কাড়ছে। চলতি বছরে আবহাওয়া কৃষকের অনুকুলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের স্বপ্নও দেখছেন এলাকার সরিষা চাষীরা।
আড়িয়াল বিল নামে খ্যাত ও পদ্মা নদীর চর অঞ্জলের মাটির গুণগত মান ও উর্বর শক্তি বেশ ভালো হবার ফলে সব ধরণের কৃষিপণ্য উৎপদন হয়ে থাকে এই উপজেলায়। যার মধ্যে অন্যতম হলো রবি মৌসুমের কৃষিপণ্য সরিষা,ডাল, গম,তিল,তিশি ইত্যাদি। রবি মৌসুমের এই ভাগ্যকুল
ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া মাঠের পর মাঠ প্রায় সবগুলো সরিষাক্ষেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে,গাছে ফুটতে শুরু করেছে সরিষাবীজ। দখিনা সমীরণে দোল খাচ্ছে সরিষা ফুল ও তরতাজা বীজগুলো। সরিষা গাছে হলুদ ফুল দেখে এবারে সরিষার অধিক ফলন ও ফলনের আশায় বুক বেধেছে এখনার কৃষক কুল।
সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,ভাগ্যকুল পদ্মা নদীর একাংশ ও ঐতিহ্যবাহী ভাগ্যকুল ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চরে বিস্তর দিগন্ত জুড়ে চোখ জুড়ানো সরিষা ক্ষেত ও হলুদের গালিচা বিছানো মাঠের পরে মাঠ। চারিদিকে মৌমাছিদের গুনগুনানী গানের সুরে এলাকা মুখরিত করে তুলছে। বর্তমান সময় পর্যন্ত আবহাওয়া চাষীদের অনুকূলে থাকার ফলে সরিষার গাছ রোগবালাইমুক্ত রয়েছে।
উপজেলার ভাগ্যকুল গ্রামের সরিষাচাষী আব্দুস সালাম জানান যে, চলতি বছরে সে তার ১৫বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছে। গত বছরে সরিষাতে অধিক লাভবান হওয়ায় সে এবছর আবারো সরিষা চাষ করেছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে কোনরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারে সরিষার বাম্পার ফলন হবার সম্ভাবনা আছে। বাজারদর ভালো থাকলে এবছরে অধিক লাভ হবার সম্ভাবনাও রয়েছে সরিষা চাষিদের।
সরিষা তুলে সকল চাষী আবার ওই জমিতে তাদের সোনালী স্বপ্ন বোর ধান রোপন করবেন, আমান আবাদের পর সরিষা তাদের একটি লাভজনক বাড়তি ফসল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সান্তনা রাণী বলেন, চলতি মৌসুমে ৪শত ৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এই উপজেলায় ১০ হেক্টর বারিয়ে ৪শত ৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদে সক্ষম হয়েছি। তবে লক্ষ্যমাত্রার বেশী পরিমান জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। আগাম জাতের সরিষায় ফুল আসাও শুরু করেছে। তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১’শ ৫০ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন,ভালো ফলনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে সরিষাচাষীদের সব ধরণের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও সরিষাচাষীদের মাঝে সরকারী প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। সরকারী অনুদান পাওয়ায় এবারে অনেক জমিতে সরিষার আবাদ বেড়েছে, ভবিষ্যতে সরকারের এধরণের উদ্যোগ অব্যহত থাকলে সামনের দিনগুলিতে এ উপজেলায় সরিষা চাষীর সংখ্যা ও আবাদের পরিমাণ অনেগুনে বেড়ে যাবে বলে সরিষা চাষীরা মনে করছেন। হলুদ ফুলের মাঝেই এখানকার কৃষক খুঁজে পেয়েছে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা