আজহারুল ইসলাম সাদী, স্টাফ রিপোর্টারঃ

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নারী নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা ১২টায় সাতক্ষীরা শহরের পোস্ট অফিস মোড়স্থ জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় একাধিক নারী নেত্রী দলে পাওয়া না পাওয়া দু:খ, কষ্ট, মান-অভিমানের কথা এবং বিপদে পাশে না দাঁড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরেন।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহানা মহিদ বুলুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম।
জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিমুন শামসের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এবং ৩১৩, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ নেত্রী এসমত আরা, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য এড. শাহনেওয়াজ পারভীন মিলি, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মাহফুজা সুলতানা রুবী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন আরা রুবী, যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি নাহিদা পান্না, যুবমহিলা লীগের ফারহা দিবা খান সাথী, জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সীমা সিদ্দিকী, মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও দেবহাটা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জিএম স্পর্শ, যুব মহিলা লীগের সুফিয়া জামান দোলন, তানজিলা বেগম, আওয়ামী লীগ নেত্রী নাসিমা খাতুন ও পারভীন আক্তার প্রমুখ।

এ সময় নারী নেত্রীদের দু:খ-কষ্ট, মান-অভিমানের কথা শুনেন এবং পাশে দাঁড়িয়ে একসাথে কাজ করার অঙ্গিকার করেন জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্মাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি এমপি।

সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম বলেন, সংরক্ষিত আসনের এমপি হিসেবে মনের মতো মানুষ পেয়েছি। কিছু মানুষ দুর্দিনের সাথী হিসেবে পেয়েছি। ৯০দশকে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি ছিলো। তারপর সেগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে নামে কমিটি আছে কিন্তু কোন অনুষ্ঠান হলে মানুষ ভাড়া করে আনতে হয়, আমরা কাজের মানুষ চাই। অনেক নারীরা রাজনীতিতে আসতে চায়, অনেকে অবহেলিত হয় বিধাই নতুন করে কেউ আসতে চায় না? কমিটি করে পরে তাদের আর খোঁজ নেওয়া হয় না? যে নেতৃত্ব দিতে পারবে তাকে আনতে হবে। জেলা ৭৮টি ইউনিয়নে কমিটি করতে হবে। নারী সংগঠনগুলোর কোন ফান্ড নেই। আমাদের নিজেদের টাকা দিয়ে ফান্ড তৈরী করতে হবে। নিজ অর্থ থাকলে যারা রাজনীতি করতে আসবে তাদের দলের প্রতি এবং ফান্ডের প্রতি দরদ বাড়বে।
জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মাহফুজা সুলতানা রুবী বলেন, কৃষক লীগের সবাই আপনাদের সাথে আছি। আপনাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবো।
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি বলেন, বর্তমান আওয়াম লীগ সরকার নারীদের অনেক কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন। নারীদের নিয়ে আমাদের অনেক কাজ করার সুযোগ আছে। সব ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে নিয়ে এক সাথে কাজ করতে চাই। আমারও অনেক মান অভিমান ছিলো। আমি সেগুলো ভুলে কাজ করেছি। অভিমান করে বসে থাকলে অযোগ্য-অদক্ষ ও দুষ্ট লোকেরা চেয়ার দখল করে নেয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দু:খের কাছে আমাদের দু:খ কিছুই না। তিনি তার পরিবারের সবাইকে হারিয়েছেন। তারপরও তিনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা সবাইকে সম্মান দেবো। কাউকে অসম্মানিত করবো না। যে ইউনিয়নে কমিটি নেই সেখানে কমিটি করে মহিলা দলগুলোকে চাঙ্গা করতে হবে। সরকারের উন্নয়ন নারীদের মাধম্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমার ডাকে আসার জন্য ধন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নারীদের ঐক্যবদ্ধ করে নারী জাগরণের সৃষ্টি করবো। আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত নারীদের নিয়ে একটি প্লাটফর্ম তৈরী করা হবে। যার মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের নিজে কাজ করবো। সুখে-দু:খে নারী নেতৃবৃন্দের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে তিনি নারী নেতৃবৃন্দের প্রতি মান-অভিমান ভুলে দলের জন্য কাজ করার আহবান জানান।

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার নারী বান্ধব সরকার। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। পুরুষের পাশাপাশি দেশ গঠনে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নারীদের এগিয়ে নিতে সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতা করবো।

ফারহা দিবা খান সাথী বলেন, আগে দল করতে যেয়ে অনেক সমস্যায় পড়েছি, তখন কাউকে পাওয়া যেত না? এখন দলে লোকের অভাব হয় না। পৌর কাউন্সিলর হয়ে যুবমহিলা লীগে কাজ করেছি। ষড়যন্ত্র করে আমাকে ঘরে তুলে দেওয়া হয়েছে। যার সম্মান তাকে দিতে হবে।

লায়লা পারভীন সেঁজুতিকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য মনোনীত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সেজন্য প্রধামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মানুষের জন্য কাজ করেছি বলে মানুষের ভালোবাসা পেয়ে থাকি। আমাদের সব সময় এক হয়ে কাজ করতে হবে। নিয়মিত বসতে হবে এবং সচেতনতা বাড়াতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করতে হবে। দুর্দিনে আমরা ছিলাম এখন ও আছি।

লায়লা পারভীন সেঁজুতি অনেক কাজ করে। সে নারী নেতৃত্বে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি ও আপনাদের সাথে কাজ করতে চাই।