মুজাহিদ,সাতক্ষীরা জেলা ব্যুরো চীফ।
সাতক্ষীরায় ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে নকল ঢাকা বিরিয়ানির স্টল। তাতে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছে ক্রেতারা। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিরিয়ানির নাম ভাঙিয়ে গড়ে ওঠা এসব বিরানী স্টলে খাবার তৈরিতে ব্যবহার হয় নিম্নমানের উপাদান। ফ্রিজে সংরক্ষিত মাংস রান্না, পোড়া তেলের ব্যবহার, পরিমাণে কম দেওয়া, এবং কেমিক্যাল মিশ্রণের অভিযোগও রয়েছে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের লাবনী মোড়, নিউ মার্কেট ,খুলনা রোড মোড় বিভিন্ন স্থানে আকর্ষণীয় সাইনবোর্ড টানিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এর ভিতরে খুলনা রোডে এবং আমিনিয়া মার্কেট সংলগ্ন নকল ঢাকা বিরিয়ানির স্টল। ঢাকা বিরানি হাউজ নামে নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে অভিনব পদ্ধতির প্রতারণা।
স্থানীয় জনসাধারণ, ক্রেতারা আসল ঢাকা বিরিয়ানি হাউজের স্বাদ দেখতে “ঢু” মারেন নকল করা নামের এই মিনি রেস্তোরায়। বিরানির স্বাদ নেওয়া শেষে তৃপ্তির ঢেকুরতো দূরে থাক খাবারের পয়সা উসুল হলো কিনা সেটা নিয়ে ভাবতে বসেন অনেকেই। এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ক্রেতাদের প্রতারিত করে আসছে অহরহ। ক্রেতারা না বুঝেই নাম নকল করা ঢাকা বিরিয়ানির স্বাদ নিতে রেস্তোরায় ঢুকে নিম্নমানের খাবার খেয়ে প্রতারিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এতে করে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো সম্পর্কে তাদের মনে বিরূপ ধারণাও তৈরি হচ্ছে। খুলনা রোড মোড়ে ও আমিনিয়া মার্কেট সংলগ্ন যে রেস্তোরাটি আছে সেটা কিন্তু আসল ঢাকা বিরানি হাউজ নয়।
সাতক্ষীরা মেসেঞ্জার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী খুলনা রোড মোড়ে ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ থেকে গত সোমবার এক প্যাকেট মোরগ পোলাও কিনে খাওয়ার সময় মাংসের সাথে লেগে থাকা মুরগির পালক দেখতে পায়। পরবর্তীতে সেটা সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এরই সূত্রপাত ধরে গতকাল ৫ ই মার্চ মঙ্গলবার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৬০০০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ভুক্তভোগী জানান, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য দুলাল হাওলাদার ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ নাম দিয়েছে। এটা আসল বিরানি হাউজ নয়। পুরান ঢাকার আসল বিরিয়ানি কেমন, তা দূর থেকে গন্ধ শুকেই বলে দেওয়া যায় এটা ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ। সাতক্ষীরায় ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ বলে যেটা বিক্রি হচ্ছে তার না আছে সেই ঘ্রাণ, না আছে সেই স্বাদ। এখানে শুধু শুধু পয়সা নষ্ট করে সুগন্ধযুক্ত কেমিকেল খেয়ে স্বাস্থ্য রোগ বালাই সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছুই নয়।
ঢাকা বিরিয়ানি হাউজের স্বত্বাধিকারী দুলাল হাওলাদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, অসাবধানতা বসত দুই একটা মুরগির পালক থেকে যেতে পারে। এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কিছুই নেই। উল্লেখ্য, সাতক্ষীরার মানুষের হাজারো খাবার তালিকায় নিঃসন্দেহে বিরিয়ানি প্রথম সারিতে রয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বিরানি হাউজ নামের শব্দটি কুলুষিত হচ্ছে। এতে করে আস্থা হারাচ্ছেন ক্রেতা লাভবান হচ্ছে বিক্রেতা। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন সহ সরকারের উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।