শ্রীনগর(মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুদে টাকা নিয়ে ঋণের চাপে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী লাপাত্তা হওয়ায় সুদখোরদের মারধরে ব্যবসায়ীর বাবা নির্মল দাস আত্মহত্যা করেছেন বলে সংবাদ পাওয়া গেছে।
শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের সুরদিয়া এলাকায় এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে মৃতের ছেলে জয় দাস থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে সংবাদ পেয়ে শ্রীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেন। নিহত নির্মল দাস উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের সুরদিয়া এলাকার মৃত নিতাই দাসের ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত নির্মল দাস মাওয়াঘাট থেকে মাছ ক্রয় করে বাড়ৈগাঁও বাজারে নিয়ে বিক্রি করতেন। একই বাজারে ছেলে সাগর দাস মা স্বর্ণালয় নামক দোকান দিয়ে বিভিন্ন লোকজনদের কাছ থেকে সুদে টাকা ও বন্ধকি স্বর্ণ রেখে ব্যবসা করে আসছেন। গত ১৩ দিন পূর্বে ছেলে সাগর ঋণের চাপে তার স্বর্ণের দোকান বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায়। এর পর থেকে সাগরের সাথে কোন যোগাযোগ করে কোন হুদিস পাননি পরিবারপক্ষ। সাগরের অবর্তমানে গতকাল শনিবার সকালে এসে ছেলের দোকান খোলে বসেন নির্মল দাস।
বেলা ১১টার দিকে ছেলের কাছে স্বর্ণ ও সুদের টাকা পাওনাদার বাড়ৈগাও এলাকার মৃত হায়দার শেখের ছেলে মনির শেখ(৫২) ও মৃত রাজ্জাক মাদবরের ছেলে রতন মাদবর(৫০)সহ আরো অনেক পাওনাদার দোকানে এসে নির্মল দাসকে আটক করে মারধর করে এবং তাকে নিয়ে শ্রীনগর বাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে নিয়ে এসে ছেলে সাগর কি পরিমাণ স্বর্ণ বন্ধক রেখেছে তা যাচাই করে নির্মল দাসকে ছেড়ে দেন। নির্মল দাস বাড়ীতে গিয়ে ঐ দিনই দিবাগত ডরাত ১টার দিকে বাড়ীর সকলে অজান্তে বসত বাড়ীর পশ্চিম পাশ্বের আমগাছের ডালের সাথে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দেয়। পরে বাড়ী লোকজন তার লাশ মাটি নামিয়ে থানা পুলিশকে সংবাদ দেন।
এব্যাপার স্বর্ণ পাওনাদার মনির শেখ এর কাছে মারধরে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সাগরের ১৫ভরি স্বর্ণ বন্ধক রেখেছি। গতকাল নির্মল দাস দোকানে আসলে পাওনাদারা দোকানে এসে তাকে আটক রেখেছে। পরে আমি গিয়ে তাকে থাবা দিয়ে ধরে শ্রীনগর বাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে নিয়ে এসে যাচাই করে ছেড়ে দেই। পরে শুনছি যে নির্মল ফাস দিতে গিয়ে পড়ে মাথায় ব্যাথা পেয়েছে।
সুদে টাকা পাওনাদার রতন মাদবর এর কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমি সাগরের কাছে ৩৫ লক্ষ টাকা পাই। আমি অসুস্থ্য মানুষ গতকালকে বাজারে গিয়েছি। কিন্তু আমি নির্মল দাসকে কোন মারধর করি নাই। পরে শ্রীনগর গিয়েছিলাম স্বর্ণ ব্যবসায়ী সাধারণ সম্পাদকের কাছে। মনিরের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মনির শেখ নির্মলকে মারধর করে।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, এই ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।