সুন্দরগঞ্জে সাংবাদিকের উপর দুর্বৃত্তায়ন
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিকের উপর দুর্বৃত্তায়নের ঘটনা ঘটেছে। অবরোধ করে মোবাইলফোন ভাংচুরের ২ ঘন্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজী পাড়াস্থ মৃত আছর আকন্দের ছেলে শফিউল ইসলাম ওরফে চুুুন্নু মাষ্টারের পরিবারবর্গ মিলে সাংবাদিকের উপর এ দুর্বৃত্তায়ন ঘটিয়েছে। এসময় মোটরসাইকেলযোগে ছমিরের বাজার থেকে ধোপাডাঙ্গা চৌমহনী যাবার পথে জনৈক আঃ মজিদের দোকানের সামনে ২টি পাকা রাস্তা মোড়ে গাছের খুঁটি দন্ডায়মান দেখতে পেয়ে মোবাইল ফোনে ধারণ করেন ঢাকা প্রেস ক্লাব’র স্থায়ী সদস্য ও প্রেসক্লাব সুন্দরগঞ্জ’র সভাপতি সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিক। এরপর ভোগান্তির শিকার ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার গ্রহণ অত:পর শফিউলের ভাই আঃ মজিদ শফিউলকে ঘটনাস্থলে ডেকে আনেন। তাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করতে না করতেই তার ছেলে মুক্তা মিয়া, মোশারফ হোসেন, ভাতিজা মুকুল মিয়া ও জাহিদুল ইসলামসহ ৩০-৩৫ জন নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, কিশোরী মিলে সাংবাদিকের প্রতি চড়াও হয়ে প্রশাসন, সরকার প্রধানসহ বিভিন্ন মহলে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ, হুকমী-ধাকমী প্রদর্শণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় সবাই মিলে সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিককে রাস্তায় অবরোধ করে ধারনকৃত স্থির ও ভিডিও চিত্র, অডিও রেকর্ড সম্বলিত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল রাস্তায় স্ব-জোড়ে ফেলে দিয়ে ভাংচুর করে। এরপর সাংবাদিকের মোটরসাইকেলের চাবি টানা-হেছড়া করে। বিষয়টি জানতে পেয়ে ২ ঘন্টা পর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) সেরাজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক সাংবাদিক ও তার ভাংচুরকৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। তবে, মোবাইলে থাকা মেমোরীকার্ড উদ্ধার করতে পারেননি। বিভিন্ন ঘটনার তথ্য উক্ত মোবাইলফোনে ধারণ করা অডিও রেকর্ড, ভিডিও ও স্থির চিত্র ঐ মেমোরীকার্ডে সংরক্ষিত ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শফিউল ওরফে চুন্নু মাষ্টারের পরিবারটি একেবারে বেপরোয়া হয়ে উছেঠে। পরিবারে বেশ ক’জন নারী, শিশু, কিশোরসহ অধিকাংশ পুরুষই মাদক কারবারি। তাছাড়া, জুয়া খেলাসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতার সঙ্গে জড়িত। মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মুকুলের বাবা রবিউল ইসলাম ছিলেন মাদক ও জুয়াখেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া, দু:চরিত্রের হওয়ায় চুন্নু মাষ্টারের সঙ্গে রবিউলের ছিল গভীর শত্রুতা। একপর্যায়ে রবিউলের আকষ্মিক মৃত্যুর ঘটনায় একটি হত্যা মামলা বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে। রবিউলের মরদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার হবার ৭ দিন আগে ছেলে মুকুল ও তার মা মিলে রবিউলকে পাশবিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ২ রাস্তার মোড়ে দন্ডায়মান ৩টি গাছের খুঁটি দেখতে পেয়ে রাস্তার ভগ্নদশাসহ অন্যান্য দৃশ্যের স্থির ও ভিডিও চিত্র ধারণ করি। প্রতি মুহুর্তই দূর্ঘটনার কথা লোক মুখে শুনতে পেয়ে সেসব সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। এরপর দোকানদার আঃ মজিদের কাছে বিষয়টি জানতে চাই। তিনি তার বক্তব্য শেখে শফিউল ওরফে চুন্নু মাষ্টারকে ঘটনাস্থলে ডেকে আনেন। সঙ্গে মুকুল, জাহিদুল, মোশারফ, মোক্তার, মুকুলের মাসহ ৩০-৩৫ জনের একটি দল এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ হুমকী-ধামকী প্রদান করে। সঙ্গে উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক বকুল বিশ্বাস, প্রশাসনসহ বর্তমান সরকার ও সরকার প্রধানকে উল্লেখ্য পূব্র্ক গালমন্দ করতে থাকলেও দুর্বৃত্ত পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায়নি। তারা মোবাইল ফোন ভেঙ্গে ফেলে মেমোরী কার্ড হস্তান্তর, গালমন্দ, হুমকী-ধামকী করায় সাংবাদিকের পেশাগত, সামাজিক তথ্যের অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে। যা আর্থিকভাবে ২৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ হবে। এ ব্যাপারে তিনি সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দুর্বৃত্তায়নের প্রতিরোধসহ ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করে অনতিবিলম্বে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবী জানান।
থানা অফিসার ইনচার্জ কেএম আজমিরুজ্জামান এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেক প্রহণের আশ্বাস প্রদান করেছেন।