কথা রাখেনা মেয়র বা পৌর কাউন্সিলরা। প্রতি নির্বাচনে পৌরবাসির সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের প্রর্তিশ্রুতি দিলেও নির্বাচনে র পর তা আর মনে থাকেনা। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা আবর্জনার স্তূপে মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র নয়নের খালসহ প্রতিটি খালই পরিনত হয়েছে ময়লার ভাগারে। ফলে এক সময়ের দৃষ্টিনন্দন এই খাল গুলো এখন পরিনত হয়েছে রোগসৃষ্টিকারী জীবানুর প্রজননক্ষেত্র হিসাবে। শুধু খাল নয়, পুরো পৌরসভা জুড়েই যত্রতত্র ময়লা ফেলে পৌরসভাটাকে পরিনত করা হয়েছে উন্মুক্ত ময়লার ভাগারে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দ্বীতিয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নতি হয়েছে ২০১৩ সালে। যা এর মধ্যে পার হয়েছে দীর্ঘ ৯ বছর। তবে প্রথম শ্রেণীর সুবিদা তো দুরের কথা ইউনিয়ন পর্যায়ের সুবিদাও মিলছেনা মিরকাদিম পৌরবাসির। সেখানে খাল ছাড়াও বিভিন্ন সড়ক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অথবা হাটবাজার সর্বত্র এখন ময়লা ময়লার ভাগাড়। পৌরসভার প্রতিটি খালেও এ চিত্র দেখা যায়। ময়লার ভাগাড়ে পরিবেশ দূষণসহ মানুষের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টির কারখানায় পরিনত হয়েছে পৌরসভাটি। এছাড়াও রিকাবিবাজার থেকে পৌরসভা কার্যালয়ে যাওয়ার একাধিক ব্রিজ রয়েছে যার প্রতিটির দু’পাশে ও নিচে ময়লার স্তুপ। এ যেন ময়লা আর্বজনার স্বর্গরাজ্য। এছাড়াও বিভিন্ন ক্লিনিক,স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনেও নেই পরিষ্কার পরিছন্নতা। পুরো পৌরসভার বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে বাজারের ময়লা, আবর্জনা ফেলে খাল ভরাট করার প্রতিযোগিতা চলছে পৌরবাসিন্দা ও ব্যাবসায়ীদের মাঝে। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা থাকলেও নেই কোন প্রতিকার। ফলে যেখানে সেখান ময়লা, আবর্জনা ফেলে ময়লার ভাগাড় তৈরী হয়েছে পুরো পৌরসভা এলাকা । ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ চলছে। দম বন্ধ করা অবস্থায় স্থানীয় জনজীবনে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠেছে। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ । পথচারী, ক্রেতা, বিক্রেতা, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার লোকজন দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পেতে নাক চেপে ধরে চলাচল করছে সড়কে।
চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন পৌরসভার লক্ষাধিক মানুষ। মশা-মাছির উপদ্রুব আর অসহনীয় দুর্গন্ধে এলাকায় বসবাস করা যেমন কষ্টকর, তেমনি সেখানে যাতায়াতও কঠিন হয়ে পরেছে। দুর্গন্ধে ভারী বাতাসের কারণে শ্বাসকষ্ট, জন্ডিস, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ধুঁকছেন তারা। বিশেষ করে এলাকার শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধরা রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয় স্থানীয়রা বলেন, আমাদের এখানে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট ডাস্টবিন নেই যে ময়লা রাখবো আর তা পৌরসভার লোক এসে নিয়ে যাবে । পৌর কর্তাদের আচরণ দেখে মনে হয় আমরা মানুষ না তাই এমন অবস্থায় আছি। ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। ছাড়াচ্ছে রোগবালাই। আর সে জন্য আমরা এর প্রতিকার চাই। এ বিষয় নিয়ে আমরা সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহীন কে জানিয়েছিলাম কোনো লাভ হয়নি এখন বর্তমান মেয়র আব্দুস সালাকে জানিয়েছি একটি ডাম্পিং স্থান ঠিক করার জন্য কিন্তু প্রতিকার পাচ্ছিনা। তাই ময়লা আর্বজনার সাথেই জীবন চলছে আমাদের।
তারা আরো বলেন,সময় মত কর দেয়া হচ্ছে তার পরেও পৌরসভার সুযোগ সুবিদা থেকে বঞ্চিত পৌরবাসী,প্রতিদিন ময়লা আর্বজনার সাথে যুদ্ধ করে চলে পৌরবাসীর জীবন। এই পৌরসভাটিতে ভোটার রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার। যার বিপরিতে পৌর বাসিন্দা হবে লক্ষাধিক। গত ৯ বছর আগে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণীতে উন্নতি হয়েছে এই দীর্ঘ সময়েও পৌর এলাকায় ময়লা আর্বজনা ফেলার নির্দিষ্ঠ স্থান নির্ধারন করতে ব্যথ হয়েছে পৌর কৃতৃপক্ষ।
দূষিত বাতাসের কারনের সেখানে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় জানিয়ে জেলা বিএম এর সভাপতি ডাঃ মোঃ আখতারুজ্জামান বাপ্পি বলেন, চারদিকে ময়লা আর্বজনা বা ধুলোবালি থাকলে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস বি, জন্ডিস, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্ক থাকে। তাই পরিস্কার পরিছন্নতার বিকল্প নেই।
তবে নাগরিকদের অসচেতনাতার অভাবের কথা জানিয়ে পৌর মেয়র হাজী মোঃ আব্দুস সালাম বলেন,আমরা চেষ্টা করছি পৌরসভায় পরিস্কার পরিছন্নতা নিশ্চিত করতে। কিন্তু পৌর নাগরিকরা অপরিকল্পিত ভাবে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে অতিশীঘ্রহী এই সমস্যা কাটিয়ে উঠার উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তবে আর আশ্বাস নয় কার্যকর উদ্যোগ ও ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে পৌরবাসির সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের দাবী সকলের।