এম এ মান্নান,বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের সবকটি উপজেলার হাওর অঞ্চলের বিল শুকিয়ে ধরছে মাছ ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন জাতের বংশ। বিল সেচের প্রতিযোগিতা শুরু হয় ফাল্গুন মাসের শুরুতে। প্রতি বছরের ন্যায়ায় এ বছরেও পাম্প মেশিন বসিয়ে বিল শুকিয়ে মা মাছ সহ, ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করছে এক শ্রেনীর লোভী মানুষেরা। সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষিত আইন লঙ্ঘন করে সেচের মাধ্যমে খাল, বিল সহ ছোট-বড় জলাশয় শুকিয়ে মাছ শিকার করছে জেলেরা। এভাবে বিল শুকানো চলতে থাকায়, জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে বলে আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ না হলে, মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে প্রকৃতিক জলজ জীববৈচিত্র । এমনকি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে গেছে মাছের প্রজাতি, আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে অনেক জাতের মাছ ।
এরিমধ্য মাঝে মধ্যে মধ্যনগর উপজেলার প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কিছু অবৈধ মাছ শিকারীকে আর্থিক জরিমানা করলেও, কান্ত হয়নি লোভী অসাধু মাছ শিকারীরা,রাতের অন্ধকারে একাধিক পাম্প মেশিন বসিয়ে রাতারাতি জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরছে।
স্থানীয় অসাধু লোভী জেলেরা সেলু মেশিন বসিয়ে সেচ দিয়ে জলাশয়গুলো শুকিয়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। কাদামাটিতে লুকিয়ে থাকা মাছও ধরা হচ্ছে বিভিন্ন মেডিসিন ব্যবহার করে । এছাড়াও ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে সেচের মাধ্যমে বিল শুকিয়ে মাছ ধরাও রয়েছে অব্যাহত।
জলমহাল নীতিমালার আলোকে বাংলা সাল অনুযায়ী বিভিন্ন শর্তে এসব জলমহালগুলো বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। প্রতি বাংলা বছরের মাঘ ও ফাল্গুন মাসের মধ্যে জলমহালগুলোর মাছ আহরণ করেন ইজারা গ্রহীতারা। মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী জলমহালগুলোতে তিন ফুট পর্যন্ত পানি রেখে মাছ ধরার বিধান রয়েছে।
এছাড়াও ইজারা শর্তেও ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদে পানি শুকিয়ে মাছ ধরা যাবে না বলে শর্ত রয়েছে। কিন্তু হাওরের সরকারি বিল ইজারাদারেরা শর্ত লংঙ্ঘনের পাশাপাশি মৎস্য সংরক্ষণ আইন অমান্য করে বিলের পানি সেচ দিয়ে শুকিয়ে মাছ ধরছেন। বিল শুকিয়ে মাছ ধরার ফলে বিলের নিচে থাকা কৈ, মাগুর, শিং,বাইম, ফলি,মিনি, পুঁটি, টেংরা, শোলসহ দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় মা মাছ ও মাছের পোনা, ডিম নষ্ট হচ্ছে। এতে মাছের প্রজনন ও উৎপাদনের বিরূপ প্রভাব পরেছে ।
মৎস্য বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, মাছের প্রজনন রক্ষার্থে মা-মাছগুলোকে অবশ্যই বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সরকারি উদ্যোগে প্রকৃত জলমহাল এলাকায় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাছগুলো লুকানোর একটি অভয়াশ্রম তৈরি করা যেতে পারে।