স্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের নান্দাইলে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে শফিকুল ইসলাম (২৫) নামে এক তরুণের সাথে এক নারীর জোরপূর্বক রাতেই বিয়ে দেওয়া হয়। অতপর সকালে পৌনে ছয় লাখ টাকা আদায় করে ওই নারীর সাথে তরুণের তালাকপত্র নিবন্ধন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নে দত্তপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা এক ভিক্ষাভিত্তি নারীর মেয়ে (৪০) এর সঙ্গে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ওই তরুণের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগঢুলা ইউনিয়নের নাউড়ি গ্রামে। স্থানীয় বাজারে ওই তরুনের চশমার দোকান রয়েছে। এক চক্ষু চিকিৎসক সপ্তাহে তাঁর দোকানে রোগী দেখেন। যে নারীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে দেওয়া হয় তিনি মায়ের সঙ্গে ভিক্ষাবৃত্তি করেন। বর্তমানে সে স্বামী পরিত্যক্তা। তাঁর এক পুত্রসন্তান রয়েছে। ওই নারীর চোখে সমস্যার কারণে গত শুক্রবার রাতে চিকিৎসক না পেয়ে ওই তরুণকে বাড়িতে ডাকা হয়। তিনি সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর হাজির হন স্থানীয় ইউপি সদস্য মিলন মিয়া। অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে ওই তরুণের কাছে তিনি টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় জোর করে রাতেই ১০ লাখ টাকা কাবিন দিয়ে তাঁদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। মীমাংসার কথা বলে পর দিন সকালে তরুণের পরিবারের কাছ থেকে পৌনে ৬ লাখ টাকা আদায় করেন মিলন মিয়া। এরপরই তালাক নিবন্ধন করানো হয়। উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন মায়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন ইউপি মেম্বার মিলন মিয়ার কথায় তিনি এ বিয়ে পড়িয়েছিলেন এবং তালাকপত্রও নিবন্ধন করেন। তবে ওই নারীকে হাতেগুজে কিছু টাকা দিয়ে আপাতত এলাকা ছাড়তে বলা হয়েছে। ফলে ওই ঘটনার পর থেকে ওই নারী ও তাঁর মেয়েকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে স্থানীয়রা জানান, ওই নারী শফিকুলের দোকানে মাঝেমধ্যে ভিক্ষা করতে যেতেন। তাঁর মায়ের চোখের সমস্যা ছিল। এ কারণে খবর পাঠিয়ে শুক্রবার রাতে তাঁকে বাড়িতে ডাকেন। সেখানে যাওয়ার পর ইউপি সদস্য মিলন মিয়ার নেতৃত্বে একটি দল শফিকুলকে আটক করে। এরপর এসব ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনার রাতে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছিল কিন্তু পুলিশ আসেনি। ওই ইউপি সদস্য মিলন মিয়া বলেন, ‘ওই তরুণ অসামাজিক কাজ করতে এসেছিল। বিষয়টি শুনেছি এবং ঘটনাস্থলে যাই। তারপর স্থানীয়রা মিলে তাদেরকে বিয়ে পড়িয়ে দেয়।’ অন্যায় করলে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলো না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। চেয়ারম্যান জানে, তারা চেয়ারম্যানের আত্মাীয়। তবে ’এ বিষয়ে মোয়াজ্জেমপুর ইউপির চেয়ারম্যান তাসলিমা আক্তার বলেন, মেম্বার আমাকে কিছুই বলেনি। বিষয়টি আমি শুনেছি। মানুষকে ফাঁদে ফেলে এভাবে টাকা আদায় করা ঠিক নয়। ঘটনার দিন দায়িত্বে থাকা নান্দাইল মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ওই রাতে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে তার আগেই ইউপি সদস্য মিলন ফোন করে বলেন, পুলিশ পাঠানোর দরকার নেই। বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে।